টানা ছুটিতে অচলাবস্থা ঠেকাতে চট্টগ্রাম বন্দরে বিশেষ ব্যবস্থা

২ সপ্তাহ আগে
ঈদে টানা ১০ দিনের সরকারি ছুটিতে চট্টগ্রাম বন্দরে কনটেইনার ও জাহাজ জটে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ার শঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় অর্থনীতির এ স্থবিরতা ঠেকাতে ১৬ দফা নির্দেশনা জারি করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। শুধু ঈদের দিন ৬ ঘণ্টা ছাড়া বাকি পুরোটা সময় যেমন বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম সচল রাখতে বলা হয়েছে, তেমনি কাস্টম-ব্যাংক-পরিবহনসহ স্টেকহোল্ডারদেরও সক্রিয় থাকার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

এমনিতে কাস্টমসের আন্দোলন-পরিবহন শ্রমিকদের উত্তেজনাসহ নানা জটিলতায় কনটেইনার জটের শঙ্কায় ভুগছিল চট্টগ্রাম বন্দর। একইসঙ্গে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া বিঘ্ন ঘটিয়েছে বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য খালাসে। এর মাঝে শুরু হচ্ছে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে টানা ১০ দিনের সরকারি ছুটি। পণ্য উঠানামা এবং ডেলিভারিতে ধীরগতি হলে জাহাজ ও কনটেইনার জটের শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা।

 

বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট খায়রুল আলম সুজন বলেন, মাদার ভ্যাসেলগুলো ফেইল করলে রফতানি পণ্য গন্তব্যে পৌঁছাতে দেরি হয়। এতে অনেক সময় সেই পণ্য নিতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে বা নানা ধরনের ছাড় চান ক্রেতারা। তাই বন্দরে জট সৃষ্টি হওয়ায় পণ্য রফতানি নিয়ে শঙ্কায় ব্যবসায়ীরা।

 

আরও পড়ুন: চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ ও কনটেইনার জট, বিপাকে আমদানিকারকরা

 

৫৩ হাজার ৫১৮ টিইইইউএস ধারণ ক্ষমতার চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে কনটেইনার রয়েছে ৩৭ হাজার ৭৭০ টিইইউএস। সরকারি বন্ধে কনটেইনার জট এড়াতে টাস্কফোর্স গঠনের পাশাপাশি ১৬ দফা নির্দেশনা জারি করেছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। এমনকি বন্ধের মাঝেও বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম পুরোদমে সচল রাখার কঠোর বার্তাও দেয়া হয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।

 

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য ক্যাপ্টেন আহমেদ আমিন আবদুল্লাহ বলেন, ঈদের দিন একটি শিফটের কাজ বন্ধ থাকবে। এর বাইরে প্রতিদিনই স্বাভাবিক সময়ে মতো করেই বন্দরের কাজ চলমান থাকবে। এজন্য গঠন করা হয়েছে টাস্কফোর্স। চালু রয়েছে হটলাইন নম্বরও। এর মাধ্যমে সেবাগ্রহীতারা সহজেই বন্দরের সেবা নিতে পারবেন।

 

আমদানি-রফতানি বাণিজ্যসহ বন্দরের পণ্য উঠানামা এবং ডেলিভারির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে অন্তত ২৬টি প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা সম্পৃক্ত রয়েছে। এক্ষেত্রে বন্দর সচল থাকলেও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে না আসলে জাহাজ ভাড়ায় ড্যামারেজ গুনতে হবে বলে শঙ্কা ব্যবসায়ীদের।

 

বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল আলম জুয়েল বলেন, কাস্টমসের জনবল ঘাটতি রয়েছে। জনবল বাড়ানো হলে বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম দ্রুতগতিতে সম্পন্ন হবে।

 

আরও পড়ুন: ২০২৪-২৫ অর্থবছর / ১১ মাসে রফতানি আয় বেড়েছে ১০ শতাংশ

 

তবে অন্যান্য সরকারি বন্ধে পণ্য ছাড়ের ক্ষেত্রে শুল্ক বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের গা ছাড়া ভাবের অভিযোগ থাকলেও এবার সেই সুযোগ থাকছে না। ১০ দিনের সরকারি বন্ধে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ সচল থাকবে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ।

 

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের সহকারী কমিশনার সাকিব হোসেন বলেন, বন্দরে পণ্য রফতানি,পরীক্ষণ, শুল্কায়নসহ স্বাভাবিক কার্যক্রম পূর্ণ উদ্যমে চালু থাকবে। এর জন্য আদেশের মাধ্যমে কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত করা হয়েছে।

 

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দরের প্রধান জেটি এবং বহির্নোঙরে বর্তমানে ১৪৬টি জাহাজের অবস্থান রয়েছে। এরমধ্যে রেকর্ড ৪৭টি জাহাজ কার্গো পণ্যবাহী। এছাড়া কন্টেইনারবাহী মাদার ভ্যাসেল রয়েছে ৩২টি।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন