শুক্রবার (৩০ মে) সকাল ৮টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামে ঘটে এ সংঘর্ষ ঘটনা। এতে উভয়পক্ষের গুরুতর আহত ৮ জন কুমারখালী ও কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
আহতরা হলেন: যদুবয়রা ইউনিয়নের বল্লভপুর গ্রামের মুনছুরের ছেলে সোনা শেখ (৪৫), তার স্ত্রী তৃষ্ণা খাতুন (৪০) ও ছেলে আশিক (২৫), ইয়েদ আলীর ছেলে সমছের বিশ্বাস (৬৭), তার ছেলে আনোয়ার বিশ্বাস (৩৪) ও মনিরুল ইসলাম (৪২) এবং মেয়ে জুলেখা খাতুন (৪৫), বদর শেখের ছেলে মিজানুর রহমান (৪০)।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বল্লভপুর গ্রামের কৃষক চঞ্চলের গাছ থেকে দুইটি নারিকেল ঝরে পড়ে। আনোয়ারের স্ত্রী স্বপ্না খাতুন তা কুড়িয়ে পান। তবে শুক্রবার সকাল ৮টার দিকে চঞ্চলের চাচি তৃষ্ণা খাতুন নারিকেল চাইতে গেলে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডার একপর্যায়ে হাতাহাতি হয়। এতে তৃষ্ণা ও সমছের বিশ্বাস আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। এ ঘটনায় দুপুরে উভয়পক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ দেন।
এরপর কয়েক দফায় চলে উভয়পক্ষের বাগবিতণ্ডা। একপর্যায়ে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে দেশীয় অস্ত্র হাঁসুয়া, কাঠের বাটাম, বাঁশের লাঠি নিয়ে তারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ৬ জন গুরুতর আহত হন।
বিকেলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, আহতদের কেউ বারান্দায় বসা। কেউবা জরুরি বিভাগে। তাদের চিকিৎসা দিচ্ছেন চিকিৎসক। তাদের হাত ও মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত চিহ্ন।
আরও পড়ুন: সুন্দরগঞ্জে কনের বাড়িতে বরপক্ষকে নরম ভাত খেতে দেয়ায় ঘটল লঙ্কাকাণ্ড
এ সময় গাছের মালিক চঞ্চল জানান, গাছ থেকে দুইটি নারিকেল পড়েছিল। তা নিয়ে উভয়পক্ষ কয়েক দফা মারামারি করেছেন। দুপক্ষেরই অনেকেই আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। আহতরা সবাই চাচাতো ভাই-বোন।
আহত সোনা শেখের স্ত্রী তৃষ্ণা খাতুন বলেন, ‘কুড়ানো নারিকেল চাইতে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন হাঁসুয়া, দা ও কাঁচি দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছে। আমি, আমার স্বামী ও সন্তান হাসপাতালে ভর্তি।’
আর প্রতিপক্ষের সমছের বিশ্বাস বলেন, ‘সামান্য নারিকেল নিয়ে সকালে একবার মারছে। থানায় অভিযোগ দিয়েছি। অভিযোগ দিয়ে বাড়িতে গেলে সজ্জিতভাবে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলা করেছে। আমিসহ সন্তানেরা গুরুতর আহত। থানায় মামলা করা হবে।’
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক বলেন, ‘রোগীদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে।’
কুমারখালী থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘দুইটি নারিকেল নিয়ে উভয়পক্ষ দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৮ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সকালের ছোট ঘটনায় দুপুরে উভয়পক্ষই লিখিত অভিযোগ করেছেন। বিকেলে ফের সংঘর্ষে জড়িয়েছেন তারা। অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।’