ঝড়-বন্যায় নিরবচ্ছিন্ন মোবাইল সেবা নিশ্চিতের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় মোবাইল টাওয়ারে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে কেনা হচ্ছে দুই হাজার পোর্টেবল জেনারেটর। এজন্য করার নিয়ম বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল থেকে মোবাইল অপারেটরদের দেয়া হচ্ছে ৪১৬ কোটি টাকা। প্রকল্পের কাজ দ্রুত শুরু করতে অপারেটরদের তাগিদ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
গত বছর উজান থেকে আসা ঢলে ভয়াবহ বন্যায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে নোয়াখালী, ফেনীসহ ১১ জেলার ২১ শতাংশ মোবাইল টাওয়ার অচল হয়ে যায়। এরমধ্যে ফেনীর ৬৫৩টি টাওয়ারের মধ্যে বন্ধ হয় ৫৯৯টিই। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে লাখ লাখ মানুষ।
এ অবস্থায় দুর্যোগকালীন মোবাইল নেটওয়ার্ক সচল রাখার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ‘প্রজেক্ট ফ্রম সোশাল অব্লিগেশন ফান্ড টু মিনিমাইজ দ্য সোশাল অ্যান্ড ইকোনমিক ইমপ্যাক্ট ডিউরিং এনি ন্যাচারাল ডিজাস্টার’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় কেনা হচ্ছে দুই হাজার পোর্টেবল জেনারেটর। এরমধ্যে সর্বোচ্চ ৭শ' গ্রামীণফোন; রবি ৫৮০; বাংলালিংক ৫২৯ এবং টেলিটক পাবে ১৯১টি জেনারেটর।
সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল (এসওএফ) ব্যবস্থাপনা কমিটির ২৬তম সভায় চার মোবাইল অপারেটরকে ৪১৬ কোটি টাকা বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশের (এমটব) তত্ত্বাবধানে তিন বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে এই প্রকল্প।
আরও পড়ুন: শাহজালালের তৃতীয় টার্মিনালে টেলিকম নেটওয়ার্ক স্থাপনে অনিশ্চয়তা
রবির চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার সাহেদ আলম বলেন, ‘বিভিন্ন সময় বিদ্যুৎ চলে গেলে বা ঝড়বৃষ্টিতে জেনারেটর সরবরাহ করা সম্ভব হয় না। এই পদক্ষেপে কার্যকরী সমাধান মিলবে। এসওএফ কমিটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিয়েছে।’
তবে প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বেশকিছু শর্ত দেয়া হয়েছে। এসওএফের অর্থ দিয়ে শুধু জেনারেটর কেনা যাবে। জেনারেটরের জন্য স্থাপনা তৈরি, রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে মোবাইল অপারেটরদের নিজস্ব অর্থায়নে। গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার তানভীর মোহাম্মদ বলেন, ‘লোকেশন চিহ্নিত করা হয়েছে, যেসব জায়গায় রুম তৈরি প্রয়োজন, সেখানে প্রস্তুতি চলছে। কাজ শেষ পর্যায়ে।’
বাংলালিংকের চিফ করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, ‘এই ফান্ডটা জেনারেটরের বদলে অন্যভাবে ব্যবহার করতে পারলে আরও ভালো হতো, যেমন নিজেদের সক্ষমতা বাড়াতে।’
দুর্গম এলাকায় নেটওয়ার্ক উন্নয়নে ব্যয় করতে মোবাইল অপারেটরদের বার্ষিক আয়ের এক শতাংশ হারে অর্থ বিটিআরসি গঠিত সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিলে জমা দিতে হয়। বর্তমানে এই তহবিলে জমা রয়েছে এক হাজার ৬শ' কোটি টাকা।
]]>