এদিকে, জুলাই সনদ নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের সামনে এখন তৈরি হয়েছে নতুন সংকট। সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে মুখোমুখি হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। কমিশন এ সংকট উত্তরণে তৃতীয় দফায় আলোচনা শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞদের সঙ্গেও দফায় দফায় বৈঠক হয়েছে কমিশনের।
সাংবিধানিক আদেশে আইনি বৈধতা এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোটের প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন। যা নিয়েও দলগুলোর সধ্যে মতবিরোধ প্রকট আকার ধারণ করেছে।
জামায়াতে ইসলামী সাংবিধানিক আদেশ এবং গণভোটের পক্ষে। নির্বাচনের আগেই গণভোট সম্পন্ন করে তার অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে অনঢ় দলটি।
আরও পড়ুন: আলোচনার টেবিল থেকে রাজপথে ইসলামি সাত দল
সাংবিধানিক আদেশ নিয়ে গণভোটে জনগণের সমর্থন না পেলে ফলাফল কী হবে, তা নিয়ে চিন্তিত জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তাই গণভোট নয় বরং নতুন সংবিধান প্রণয়নে গণপরিষদ নির্বাচন হলেই ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ হবে বলে মত দলটির।
অন্যদিকে সনদ বাস্তবায়নে নতুন নতুন প্রস্তাবনা ঐকমত্যকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে মনে করে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। সাংবিধানিক সংস্কার নির্বাচিত সরকারের হাতে রাখার দাবি দলটির।
নির্বাচিত সরকারের হাতে সাংবিধানিক সংস্কার ন্যস্ত করার কথা এতদিন বিএনপি বলে এলেও এখন সেই অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসেছে। তবে, বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ সমর্থন করে না দলটি। সনদ বাস্তবায়নে বৈধ সাংবিধানিক প্রক্রিয়া বের হলে, তাতে সায় দেবে বিএনপি।
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ‘রাষ্ট্রপতি সাংবিধানিক আদেশ জারি করবেন। এর ভিত্তিতে একটা গণভোট হবে। দুটি কাজই হতে হবে নির্বাচনের আগে। তখন এটার একটা রাজনৈতিক স্বীকৃতি হলো আবার আইনি ভিত্তিও পেল। যখন আইনের অংশ হয়ে যাবে, তখন এর ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচন স্বচ্ছ হবে।’
আরও পড়ুন: জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দিনক্ষণ নিয়ে যা বললেন আলী রীয়াজ
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, ‘এখনো আমরা মনে করি গণপরিষদের মধ্য দিয়ে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করলে বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা দূর করা সম্ভব হবে। কিন্তু সাংবিধানিক আদেশ জারির কথা উঠছে, আবার যখন থেকে তারা জারি করবে তখন থেকে আইনি কার্যকর হবে। পরবর্তীতে আবার সাধারণ নির্বাচনের সময় গণভোট হবে। কিন্তু গণভোটে ভিন্ন ফলাফল এলে, তাহলে কী হবে।’
সিপিবির সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘সংবিধান সংশোধন করে যেটা করা দরকার, সেটা আগামী সংসদের জন্য রেখে দিতে হবে। এটা ছাড়া নতুন করে জুলাই সনদ বাস্তববায়নের নতুন নতুন পদ্ধতি আনতেছে, সেটা আমাদের ঐক্যমতকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘যে প্রক্রিয়াটা বিদ্যমান সংবিধান বহাল থাকা সত্ত্বেও সেটা আবার অনুমোদিত হবে। তাহলে একটা খারাপ নজির সৃষ্টি হবে। যদি কোনো আইনানুগ পন্থা আলোচনার মাধ্যমে আমরা উদ্ভাবন করতে পারি, সেটা যেকোনো বৈধ আইনি এবং সাংবিধানিক প্রক্রিয়া হবে তাতে আমরা একমত হবো।’
]]>