শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরীর ঐতিহাসিক লালদিঘী ময়দানে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মসগানগরের নগর সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দেশের ইতিহাসের কিংবদন্তিতুল্য আখ্যান। দেড় হাজারের অধিক নিহত এবং ৩০ হাজারের অধিক আহত ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দেশে সৃজিত হয়েছে নতুন ইতিহাস। যুগান্তকারী এই ইতিহাস বিনির্মাণে অংশ নিয়েছে জাতি-ধর্ম-শ্রেণি-পেশা-নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে আলেম-উলামা এবং মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরাও। জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আলেম সমাজের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য।
শায়েখে চরমোনাই বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সূচনা হয় সরকারি চাকরিতে বৈষম্য দূর করে কোটা সংস্কারের দাবিতে। দেশের সর্বস্তরের মানুষ এ দাবির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে। ইসলামও সব ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে এবং যৌক্তিক সংস্কারের পক্ষে। একই সঙ্গে সব ধরনের জুলুম ও বিশৃঙ্খলার বিপক্ষে। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যেমন আলেম সমাজের অভিভাবক মুহাম্মদুল্লাহ হাফেজ্জি হুজুর ঘোষণা করেছিলেন, ‘এই যুদ্ধ জালেমের বিরুদ্ধে মজলুমের সংগ্রাম’, তেমনি ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানেও রাজপথে রক্তের স্রোত প্রবাহিত করে দেশের আলেম সমাজ এবং মাদরাসা শিক্ষার্থীরা। দেশের আলেম সমাজ ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে যেভাবে রক্ত দিয়েছেন, তেমনি ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানেও শতাধিক আলেম ও মাদরাসা শিক্ষার্থী শহীদ হয়েছেন, অঙ্গ হারিয়েছেন, বৈষম্যের বিরুদ্ধে জুমার খুতবা দেওয়ায় চাকরি হারিয়েছেন আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেওয়ায়। এ ছাড়া সারা দেশে অসংখ্য আলেম শারীরিকভাবে নিগৃহীত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: আলেম সমাজকে নজিরবিহীন নির্যাতন করেছে আওয়ামী লীগ: দুদু
ইসলামের পক্ষে একটি ভোট বাক্সের জন্য ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সর্বোচ্চ ছাড় দিতেও প্রস্তুত। আর একমাত্র সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচনের মাধ্যমেই জাতীয় সরকার গঠন সম্ভব বলে জানান শায়খে চরমোনাই।
নগর সভাপতি আলহাজ্ব মুহাম্মদ জান্নাতুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও নগর সেক্রেটারি আলহাজ্ব আল মুহাম্মদ ইকবালের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত নগর সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, কেন্দ্রীয় ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি দেলোয়ার হোসাইন সাকী প্রমুখসহ ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর, সহযোগী সংগঠন এবং বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
সম্মেলন শেষে প্রধান অতিথি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরের ২০২৫-২০২৬ সেশনের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন।