জীবিত নবজাতকে মৃত ঘোষণা করা সেই হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার বন্ধ

৩ সপ্তাহ আগে
বেসরকারি যেই হাসপাতাল থেকে মৃত ঘোষণা দিয়ে নবজাতককে কবরস্থানে দাফনের জন্য পাঠানো হয়েছিল আলোচিত সেই হাসপাতালে বড় ধরনের অনিয়ম খুঁজে পেয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) শেষ বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সেখানে অভিযান চালানো হয়।

এসময় অনিয়ম ধরা পড়ায় হাসপাতালটি সিলগালা করে বন্ধ রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। এরমধ্যে আগামী দুই দিনের মধ্যে বর্তমান ভবন থেকে হাসপাতালটি খালি করার নির্দেশ দেয়া হয়।

 

এছাড়া তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার সিলগালা করে সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখারও নির্দেশ দেয়া হয়।

 

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বাপ্পী দত্ত রনী এসময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক নগদ ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।

 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল হাসান ফয়সাল, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ মিজানুর রহমান এবং চাঁদপুর মডেল থানা পুলিশের একটি দল।

 

আরও পড়ুন: ক্লিনিকে ঘুমিয়ে ছিলেন মা, এই ফাঁকেই নবজাতক চুরি

 

প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই হাসপাতালটি খালি করা এবং আইনগত বিধান অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

উল্লেখ্য, গত ১৪ সেপ্টেম্বর নবজাতক এক শিশুকে মৃত ঘোষণা দিয়ে দাফনের জন্য চাঁদপুর পৌরসভার কবরস্থানে নিয়ে যান দ্য ইউনাইটেড হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ওয়ার্ড বয় ফারুক গাজী। কবরস্থানের লোকজন সেই শিশুটিকে জীবিত দেখতে পেয়ে স্থানীয় লোকজন এবং গণমাধ্যম কর্মীদের জানায়। পরে তারা শিশুটিকে পাশের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করায়। দীর্ঘ আট ঘণ্টা চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থায় শিশুটি ঐদিন রাত সাড়ে নয়টায় মারা যায়।

 

এ ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ থেকে নবজাতক শিশুটিকে বহনকারী ফারুক গাজী নামে ওই ব্যক্তিকে শনাক্ত শেষে এবং গ্রেফতার করে।
এরইমধ্যে একটি মামলাও দায়ের করা হয়েছে।

 

তারই সূত্র ধরে বুধবার ভ্রাম্যমাণ আদালত নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে দ্য ইউনাইটেড হসপিটাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান পরিচালনা করে।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিগত ২০১৭ সাল থেকে নানা ধরনের অনৈতিক কর্মকান্ড এবং নবজাতক শিশু বেচাকেনার অভিযোগ রয়েছে।

 

এসব অভিযোগের বিষয়ে এ যাবতকাল স্থানীয় ও জাতীয় প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ায় একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। নানা অনিয়ম এবং সংবাদ প্রতিবেদন সত্বেও ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রভাবশালী মহলের অযাচিত হস্তক্ষেপে প্রতিষ্ঠানটি সকল আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তাদের এ সকল অনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা অব্যাহত রেখেছে।

 

বেসরকারি এই হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুলতানা সেতু দীর্ঘদিন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে নবজাতক শিশু কেনাবেচা করে আসছিল।

 

আরও পড়ুন: ভুল চিকিৎসার অভিযোগ: নবজাতকের পরিবারকে ৫ কোটি টাকা দিতে রুল

 

রাতে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ওয়ার্ড বয় ফারুক গাজী ছাড়া আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর নবজাতক শিশুকান্ডে এই পর্যন্ত নতুন করে কাউকে গ্রেফতার করতে পারিনি পুলিশ।

 

তবে অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান, চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. লুৎফর রহমান।
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন