জিলহজ মাসের ফজিলত ও কোরবানির তাৎপর্য

২ সপ্তাহ আগে
ঈদুল আজহা মুসলিমদের জন্য খুশির দিন, অপরদিকে জিলহজ মাস আরাবী মাস সমূহের মধ্যে অন্যতম, তাই এই দিন ও মাসটির সাথে ইসলামের কয়েকটি বিধান জড়িত, তন্মধ্যে অন্যতম হল,আল্লাহ তাআলার জন্য পশু কোরবান করা।

 বিষয়টি সামাজিক দৃষ্টি রক্ষার জন্য নয়, বরং তা একটি মহান ইবাদত হিসেবে করা চাই, কারণ এতে রয়েছে তাকওয়া ও ইখলাসের মহান পরীক্ষা, আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেন। لَنۡ یَّنَالَ اللّٰہَ لُحُوۡمُہَا وَلَا دِمَآؤُہَا وَلٰکِنۡ یَّنَالُہُ التَّقۡوٰی مِنۡکُمۡ এগুলোর গোশত ও রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, কিন্তু পৌঁছে তাঁর কাছে তোমাদের মনের তাকওয়া। (সুরা হজ, আয়াত -৩৭)

 

১০ জিলহজ সুবহে সাদিক থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্ত পর্যন্ত, যে সকল প্রাপ্তবয়স্ক, বোধ সম্পূর্ণ,স্বাধীন নর-নারী কর্তনযোগ্য ঋণ ব্যতীত নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়, তাহলে তাদের উপর কোরবানি করা ওয়াজিব।

 

যে পশুর কোরবানি জায়েজ


গৃহপালিত উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা  এগুলোর মধ্যে নর-মাদি উভয়টি দ্বারাই কোরবানি জায়েজ, এগুলো ব্যতীত  অন্য কোন গৃহপালিত প্রাণী যেমন - হাঁস, মুরগী এবং বন্যপ্রাণী ও বন্য গরু দ্বারা কোরবানি জায়েজ হবে না।  


আর উট কমপক্ষে পাঁচ বছরের হতে হবে। গরু, মহিষ কমপক্ষে দুই বছরের হতে হবে। ছাগল ভেড়া ও দুম্বা কমপক্ষে এক বছরের হতে হবে। ৬ মাস ঊর্ধ্ব বয়সের ভেড়া ও দুম্বা যদি এমন হৃষ্টপুষ্ট হয় যে, দেখতে এক বছরের মতো মনে হয়, তাহলে তা দ্বারাও কোরবানি করা জায়েজ। ছাগলের বয়স এক বছরের কম হলে তা দ্বারা কোরবানি করা জায়েজ হবে না। ( ফাতাওয়ায়ে কাযিখান : ৩/৩৪৮, ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী : ৫/২৯৭)

 

আরও পড়ুন: মানতের কাফ্ফারা কী?

 

গর্ভবতী পশু কোরবানি জায়েজ।তবে প্রসবের সময় আসন্ন, এমন পশুর কোরবানি করা মাকরুহ। আর গর্ভবতী পশু কোরবানি করার পূর্বে যদি বাচ্চা প্রসব করে, তাহলে বাচ্চা জীবিত সদকা করবে, কিংবা এর সাথে বাচ্চাকেও কোরবানির দিন জবাই করে বাচ্চার গোস্ত সদকা করা ওয়াজিব। 


তবে জীবিত সদকা করা উত্তম। আর গর্ভবতী পশু কোরবানির নিয়তে জবাইয়ের পর বাচ্চা জীবিত বের হলে কোরবানির সময়সীমার মাঝে সেটাও জবাই করে মা ও বাচ্চা উভয়টির গোস্তই খেতে পারবে। কিন্তু সময়সীমার মাঝে বাচ্চা জবাই না করলে পরবর্তীতে বাচ্চাটিকে জীবিত সদকা করে দেওয়া ওয়াজিব। (ফাতাওয়ায়ে কাযিখান : ৩/৩৬৭-৩৫৪-৩৫০)

 

বলদ গরু ও বন্ধ্যা পশুর কোরবানি জায়েজ। খাসিকৃত ছাগল দ্বারা কোরবানি করা উত্তম। পাগল পশুর কোরবানি জায়েজ। তবে যদি এমন পাগল হয় যে, কোনো খাবার খেতে চায় না, তাহলে তা দ্বারা কোরবানি জায়েজ নেই। জবাইয়ের জন্য পশু শোয়ানোর সময় পা ভেঙ্গে গেলে কিংবা চোখে আঘাত লেগে চোখ নষ্ট হয়ে গেলেও কোরবানি করা জায়েজ। (ফাতাওয়ায়ে আলমগিরি: ৫/২৯৭-২৯৮-২৯৯, বাদাইউস সানায়ে : ৬/৩১২-৩১৩)
 

লেখক: শিক্ষার্থী, জামিয়া কোরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগ ঢাকা

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন