জাহানারা আলমের অভিযোগের বিষয়ে যা বললেন বিসিবি সভাপতি

২ সপ্তাহ আগে
জাহানারা আলমসহ কয়েকজন নারী ক্রিকেটারদের দেয়া সাম্প্রতিক কয়েকটি সাক্ষাৎকারে নারী ক্রিকেটে যৌন নিপীড়ন এবং অবৈধ সিন্ডিকেটের ভয়াবহ অভিযোগ উঠে এসেছে। এ বিষয়ে আজ (৯ নভেম্বর) সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেছেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল এবং মিডিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন।

জাহানারা আলমের সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ এলে বিসিবির মিডিয়া বিভাগের প্রধান আমজাদ হোসেন বলেন, ‘ভিডিও ইন্টারভিউটি দেখার পর আমরা তাৎক্ষণিকভাবে একটা তদন্ত কমিটি গঠন করি। অ্যাপ্লাইড ডিভিশনের একজন বিচারকের নেতৃত্বে কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি পুরোপুরি স্বাধীনভাবে কাজ করবে এবং যেভাবে বলা হয়েছে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে তারা একটা পূর্ণ রিপোর্ট এবং সুপারিশ জমা দেবেন। বিসিবিতে জমা দেওয়ার পর এনএসসিতে দেবে। ওই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতেই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে কিভাবে কী করা হবে। কমিটির সদস্যরা যথেষ্ট অভিজ্ঞ। তারা ভালোভাবেই বিচার-বিবেচনা করবেন। তাদের কাজের ক্ষেত্রে শুধু জাহানারা আলমের ঘটনাটাই নয়, এই ধরনের আরও যত অভিযোগ আছে সবগুলোই তারা খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন।’

 

তদন্ত চলাকালে অভিযুক্ত কাউকে ওএসডি অর্থাৎ দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হবে কিনা এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওএসডির বিষয়টা এখনও প্রক্রিয়াধীন। যদি সেটা মনে হয় (করা উচিত) তাহলে করা হবে।’

 

আরও পড়ুন: হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ফারুক

 

জাহানারার সঙ্গে যৌন নিপীড়নের বিষয় ২০২১ সালে একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছিল বিসিবিতে। বিষয়টি তখন নিষ্পত্তিও করা হয়। নতুন করে এই ইস্যুতে আলোচনা তৈরি হওয়ায় অভিযোগ না করলেও তদন্তের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি আমিনুল ইসলাম। তবে অভিযোগ এলে গুরুত্ব আরও বাড়ত বলে মনে করেন বিসিবি বস। 

 

তিনি বলেন বলেন, ‘ঘটনাটা ২০২১-২২ সালের ছিল। আমরা জানতাম তখনই এটা শেষ হয়ে গিয়েছিল৷ আমরা খবরগুলো জানছি কিছু মাধ্যম থেকে। ক্রিকেট বোর্ডে কোনো লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ আসেনি। তবুও আমরা বিষয়টি দেখছি। যদি কেউ ক্রিকেট বোর্ডে লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ করে, তাহলে বোর্ড ব্যাপারটা আরও সিরিয়াসলি দেখবে। সত্য বা মিথ্যা বলছি না, নিউজ তো অনেক ধরনের থাকে।’

 

তিনি যোগ করেন, ‘জাহানারার অভিযোগ লিখিতভাবে এসেছিল ২০২১ সালে। সে বছরই সেটা সমাধান হয়ে গিয়েছিল। নতুনভাবে যেটা এসেছে সেটা আমাদের কাছে আসেনি।’

 

আরও পড়ুন: শেষ ওভারে ৫ ছক্কা খেয়ে দলকে ডোবালেন আকবর আলী

 

নারী ক্রিকেট নিয়ে নিজের চিন্তা-ভাবনার কথা জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘নারী উইংটা আমার কাছে সবসময় অবহেলিত মনে হতো। সভাপতি হওয়ার পরপরই সংবাদ সম্মেলনে বলেছি যে আমাদের নারী ডিরেক্টর নেই, নারী উইংয়ে নারী নেই। বিসিবির গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করার কোনো ক্ষমতা আমার নেই। পরিবর্তন করতে পারলে......কয়েকজন নারী পরিচালক আসলে খুশি হব। এখন থেকে আমরা যে কোর্সই করাব, কোচিং হোক বা আম্পায়ারিং, জেন্ডার ইকুইটি রক্ষা করা হবে। একটা ছেলে বা মেয়ে খেলতে আসলে সেটার জন্য তাকে মাঠের ভেতরে বা বাইরে যত ধরনের সুবিধা দেয়া যায়, দেয়া হবে। আমরা শুধু দেব না, সর্বস্ব দিয়ে দেব। আমরা চাই না এখানে খেলতে এসে কেউ অবহেলিত হোক বা কোনোকিছুর স্বীকার হোক।’

 

তিনি আরও বলেন, ‘পেছনে তাকালে দেখবেন, আমরা কী করতাম জাতীয় দলকে প্রশিক্ষণ দেয়া ছাড়া। এখন ক্রিকেটকে বিকেন্দ্রীকরণ করার মূল কারণই হচ্ছে সবাইকে সমান সুযোগ করে দেয়া। যে জেলা বা বিভাগেই থাকুক, ছেলে হোক মেয়ে হোক, সবাই যেন পুরো সুবিধাটাই পায়। তার আগে কিছুই ছিল না লিগ ছাড়া। শুরু করলাম আজকে আমরা।’  

 

নারী ক্রিকেটে সাম্প্রতিক উন্নতি নিয়ে বলতে গিয়ে সর্বশেষ নারী বিশ্বকাপের উদাহরণ টানেন বিসিবি সভাপতি। তিনি বলেন, ‘মারুফা যখন বল করছিল ইংল্যান্ডের সঙ্গে, তখন ধারাভাষ্যকাররা বলেছে এত সুন্দর ইনসুইং দেখেনি অনেকে আগে। বিশ্বকাপে যে মানের দল খেলেছে আমাদের, ভাগ্য ভালো থাকলে সেমিফাইনাল খেলে ফেলতে পারতাম আমরা, কয়েকটা ম্যাচ জিততেও পারতাম।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন