জামালপুরের মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, ইসলামপুর, দেওয়ানগঞ্জ, সরিষাবাড়ি এবং বকশীগঞ্জ উপজেলার বিস্তীর্ণ সরিষার মাঠজুড়ে সারিবদ্ধভাবে বসানো হয়েছে মধু সংগ্রহের বাক্স।
মেলিফেরা, ডরসেটা এবং সেরেনা জাতের মৌমাছিরা মধু সংগ্রহ করছে। মৌচাষিরা জানিয়েছেন, এর মধ্যে মেলিফেরা মৌমাছি মধু সবচেয়ে বেশি বহন করতে পারে। ৯০ দশকের আগে অস্ট্রেলিয়া এবং ভারত থেকে মেলিফেরা জাতের মৌমাছি আমদানি করে কৃষি অধিদফতর। এরপর প্রজনন বৃদ্ধি করেন মৌচাষিরা। এতে মধু সংগ্রহ বেশি হয়।
প্রতিদিন প্রতিটি বাক্স থেকে চার থেকে পাঁচ কেজি মধু পাওয়া যাচ্ছে। মাসে তিন বার মৌমাছি কলোনি (বাক্স) থেকে মধু সংগ্রহ করা হয়ে থাকে। সরিষার মধুর চাহিদা বেশি থাকায় মাঠ থেকেই বিক্রি হচ্ছে মধু।
আরও পড়ুন: সমন্বয়ক পরিচয়ে উঠান বৈঠকে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা, পুলিশে সোপর্দ
সাতক্ষীরা জেলার মৌচাষি মিজানুর রহমান বলেন, ‘এ বছর মধু বেশি পাওয়া যাচ্ছে। বৃষ্টি ও কুয়াশা কম থাকায় মৌমাছিরা সকাল থেকে ফুল থেকে মধু আহরণে বেরিয়ে পড়ে। প্রতিদিন ১ হাজার কেজি মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে বাক্স বসানো হয়। ৩ মাস চলে মধু সংগ্রহ। তবে কৃষকরা সরিষা খেতে কিটনাশক প্রয়োগ করায় মধু সংগ্রহে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। পাশাপাশি অনেক মৌমাছি মারাও যাচ্ছে। কৃষি অফিস থেকে সরিষায় কিটনাশক প্রয়োগ করতে নিষেধ করলেও অনেক কৃষক তা মানছে না।’
সরিষা চাষি আজাদ বলেন, ‘সরিষার সময়ে মৌচাষিরা এসে মধু সংগ্রহ করে। এতে সরিষাও ভালো হয়, মধুও ভালো হয়। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মধু সংগ্রহ করে নিয়ে যায়। এতে কোনো সমস্যা হয় না। বরং সরিষার ফলন বাড়ছে।’
জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ জাকিয়া সুলতানা বলেন, ‘এখন পর্যন্ত মৌ বাক্স স্থাপিত হওয়ায় সরিষার ফলন বৃদ্ধির পাশাপাশি মধু উৎপাদন ও ফলন বৃদ্ধিতে কৃষকরাও উপকৃত হচ্ছেন। চলতি মৌসুমে ৪১ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। কৃষি অফিসের তথ্য মতে এ বছর মধু সংগ্রহে ৭ হাজার ২৮৭টি বাক্স স্থাপন করা হয়েছে।’
]]>