জামালপুরে বকেয়া বেতন চাওয়ায় নার্সকে মারধরের অভিযোগ

২ সপ্তাহ আগে
জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার হাজরাবাড়ী জেনারেল হাসপাতালে পাঁচ মাসের বকেয়া বেতন চাইতে গিয়ে মারধরের শিকার হয়েছেন আশা মনি (২০) নামে এক নারী নার্স। ঘটনার পর হাসপাতালের অধিকাংশ কক্ষে তালা ঝুলিয়ে মালিকপক্ষ ও কর্মচারীরা আত্মগোপনে চলে গেছেন।

ভুক্তভোগী আশা মনি মেলান্দহ পৌরসভার বাসুদেবপুর এলাকার আসর শেখের মেয়ে। তিনি প্রায় দুই বছর ধরে হাজরাবাড়ী জেনারেল হাসপাতালে নার্স হিসেবে কর্মরত। শুরুতে বেতন নিয়মিত পেলেও গত পাঁচ মাস ধরে কোনো বেতন পরিশোধ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।


সোমবার (২ জুন) দুপুর আনুমানিক ২টার দিকে তিনি হাজরাবাড়ী বাজার এলাকায় অবস্থিত হাসপাতাল কার্যালয়ে গিয়ে মালিকদের কাছে বকেয়া বেতন চাইলে, হাসপাতালের মালিক মো. সবুজ ও মো. রফিক উত্তেজিত হয়ে তাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি ও লাথি মারেন বলে অভিযোগ করেন আশা মনি। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করেন।


তিনি আরও জানান, শুধু মারধরই নয়, তাকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। এরপর মানসিক ও শারীরিকভাবে বিপর্যস্ত অবস্থায় ওই দিন রাতেই মেলান্দহ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।


অভিযোগ পাওয়ার পর মঙ্গলবার (৩ জুন) দুপুরে মেলান্দহ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। তদন্তে নার্সকে মারধরের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানান মেলান্দহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলে দেখা যায়, হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার, রিসেপশন, ব্লাড কালেকশন রুমসহ গুরুত্বপূর্ণ ইউনিটগুলো বন্ধ অবস্থায় রয়েছে। কোনো রোগী বা স্বজনদেরও দেখা যায়নি।


আরও পড়ুন: রংপুরে দুই ইরানি নাগরিককে মারধর করে মোবাইল ও ডলার ছিনতাই


এদিকে হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মচারী বলেন, আশা মনির অভিযোগ পুরোপুরি সত্য। আমাদেরও দীর্ঘদিন ধরে বেতন দেওয়া হচ্ছে না। বেতন চাইলে মালিকপক্ষ দুর্ব্যবহার করে। চাকরি হারানোর ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।


অভিযুক্ত মো. সবুজ বলেন, আশা মনির এক মাসের বেতন বাকি রয়েছে, পাঁচ মাসের নয়। ওই দিনই তাকে টাকা দেওয়ার কথা ছিল। তবে হাসপাতালের ফার্মেসির কিছু দেনা পরিশোধ করতে গিয়ে হাতে টাকা ছিল না। নার্সকে কেউ মারধর করেনি, শুধু কথাকাটাকাটি হয়েছে।


ভুক্তভোগী আশা মনি বলেন, আমি শুধু আমার প্রাপ্য বেতন চেয়েছি। বিনিময়ে আমাকে যেভাবে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে, তা আমি কল্পনাও করিনি। আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি এবং ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।


স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, হাজরাবাড়ী জেনারেল হাসপাতালে কর্মীদের সঙ্গে বেতন সংক্রান্ত বিরোধ নতুন কিছু নয়। মাঝেমধ্যেই এ ধরনের ঝামেলা হয়।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন