জামালপুরে নদীতে ডুবে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৫, শোকে স্তব্ধ পুরো গ্রাম

১ সপ্তাহে আগে
জামালপুরের মাদারগঞ্জের চরভাটিয়ানী ঝিনাই নদীতে পড়ে নিখোঁজ শিশু বৈশাখী আক্তারের (৯) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে এ ঘটনায় মৃতের সংখ্যা পাঁচজনের দাঁড়িয়েছে।

রোববার (২ নভেম্বর) সকাল ৬টায় ঘটনাস্থল থেকে আধা কিলোমিটার দূরে নদী থেকে নিখোঁজ ওই শিশুর ভাসমান মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।


বৈশাখী স্থানীয় সিডিআই কিন্ডার গার্ডনের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল। সে চরভাটিয়ানী গ্রামের হোসেন আলীর মেয়ে। এক ভাই এক বোনের মধ্যে বৈশাখী ছোট।


এ দিকে মেয়ের মরদেহ পেয়ে দিনমুজুর বাবা হোসেন আলী কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। শোকে স্তব্ধ রয়েছে পুরো গ্রাম। এলাকাবাসী এসে ভিড় করছেন মৃত শিশুদের বাড়িতে।


আরও পড়ুন: জামালপুরে নদীতে গোসলে নেমে নিখোঁজ মাদ্রাসাছাত্র


এ ঘটনায় মৃত অন্য শিশুরা হলো: মাদারগঞ্জ উপজেলার সিঁধুলী ইউনিয়নের চরভাটিয়ান এলাকার দুদু মিয়ার মেয়ে পলি আক্তার ও আবু হাসান। সরিষাবাড়ী উপজেলার বাউসি এলাকার নুরুল ইসলামের মেয়ে ছায়েবা আক্তার একই এলাকার আজাদ মিয়ার মেয়ে কুলসুম (১৩)।


জানা যায়, গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) বিকেল ৪টায় জামালপুর জেলার মাদারগঞ্জ উপজেলার সিঁধুলী ইউনিয়নের ভাটিয়ানী ঝিনাই নদীর আনার বাড়ি ঘাটে ৫ শিশু নদীতে গোসল করতে গেলে তীব্র স্রোতে ডুবে যায়। খবর পেয়ে জামালপুর ফায়ার সার্ভিস দল ঘটনাস্থলে এসে প্রায় ২ ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে পলি (১০), আবু সাইদ (৮) এবং সায়েদা (৮) নামে তিন শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে। 


এরপর দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব না হলে রাত ১০টায় উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করা হয়।


আরও পড়ুন: নদীর পাড়ে নৌকায় খেলছিল শিশুরা, হঠাৎ ডুবে ৩ জনের মৃত্যু, একজন নিখোঁজ


এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের টিম লিডার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘নদীর গভীরতা এবং স্রোত বেশি থাকায় উদ্ধার অভিযান চালানো যাচ্ছিল না। পরের দিন শনিবার আবারো উদ্ধার অভিযান করা হলে কুলসুম (১০) নামের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রচণ্ড বৃষ্টির কারণে উদ্ধার কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়।’


তিনি আরও বলেন, আজ নিখোঁজ বৈশাখীর মরদেহ ভেসে ওঠে। পরে এলাকাবাসী মরদেহ উদ্ধার করে। বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছে।’


এ দিকে সরেজমিনে চরভাটিয়ানী মধ্যপাড়া গ্রামে দুই সন্তান হারানো প্রবাসী দুদু মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, কান্না আর আহাজারি। মা বাবা দাদা আর দাদি বার বার মূর্ছা যাচ্ছেন। ২০০৮ সালে সন্তানের সুখের আশায় সিঙ্গাপুরে পাড়ি দেন দুদু মিয়া।


দুদু মিয়া বলেন, আমার সব শেষ। সন্তানদের সুখের জন্য বিদেশে গিয়েছিলাম। তারাই তো আমাকে ছেড়ে গেল। এরপর আর কোনো কথাই বলতে পারেননি দুই সন্তান হারা ওই বাবা। 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন