জামালপুরে জামাই মেলায় মানুষের ঢল

২ সপ্তাহ আগে
জামালপুরের মাদারগঞ্জে জামাই মেলায় মানুষের ঢল নেমেছে। মেলাকে কেন্দ্র করে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো জেলায়। মেলাকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্নস্থান থেকে জামাইরা শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে এসেছেন। স্ত্রী সন্তান নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকবেন কয়েকদিন।

গত ১৭ ডিসেম্বর থেকে উপজেলার চরপাকেরদহ ইউনিয়নের পলাশপুরে ওই মেলা শুরু হয়, চলবে ২৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত।


জানা যায়, জামালপুরের মাদারগঞ্জের চরপাকেরদহ ইউনিয়নের পলাশপুরে প্রতি বছর বিজয় দিবসে ১৭ ডিসেম্বর থেকে ৭ দিনব্যাপী জামাই মেলার আয়োজন চলে। মেলাকে ঘিরে আয়োজকদের পক্ষ থেকে এই অঞ্চলের সারাদেশে থাকা জামাইদের শ্বশুরবাড়িতে আমন্ত্রণ করা হয়। দাওয়াত পেয়ে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে মেলার এক দিন আগেই শ্বশুরবাড়িতে আসেন জামাইরা।


শ্বশুর ও শাশুড়ি কাছ থেকে টাকা নিয়ে মেলা থেকে বড় মাছ, শ্বশুর ও শাশুড়ির জন্য পান-সুপারি কেনেন। ছোট শ্যালক শ্যালিকার জন্য নেন মিষ্টি। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা মেলায় কসমেটিকস, প্রসাধনী, খাবার, খেলনা, মিঠাই-মিষ্টান্ন ও মাছসহ বিভিন্ন ধরনের চার শতাধিক দোকান বসেছে। আছে চটপটি-ফুচকা থেকে শুরু করে মুখরোচক নানা ধরণের খাবারের দোকান।


শিশুদের বিনোদনের জন্য নাগরদোলা, চরকি, দোলনাসহ থাকে নানা আয়োজন। সাজিয়ে রাখা হয়েছে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউশ, গ্রাসকার্পসহ বাহারি মাছ।


আরও পড়ুন: বাণিজ্য মেলায় দর্শনার্থী প্রচুর, ক্রেতা কম


ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, গত বছর থেকে তারা মেলায় আসছেন। গতবার মেলায় এসে লাভ করেছেন। এবারও বেচাকেনা ভালো।


মেলায় ঘুরতে আসা দর্শনার্থীরা বলেন, প্রতি বছর মেলায় আসতে এই অঞ্চলের জামাইরা দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে শ্বশুরবাড়িতে আসেন। এই আয়োজনের কারণে পুরো এলাকায় আনন্দ এবং উৎসবের আমেজ বিরাজ করে। তবে অবিবাহিত তরুণ-তরুণীরা বিয়ে না করায় মেলায় এসে হতাশা প্রকাশ করছেন।


চরপাকেরদহ পলাশপুর গ্রামের আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘সাভার থেকে মেলার জন্যই চলে এসেছি। গত বছরও মেলায় এসেছি এবার আগের চেয়ে বড় আকারে সাজানো হয়েছে। দূরদূরান্ত থেকে জামাইরা সব এসেছে মেলায়। জামাইরা শ্বশুর-শাশুড়ির কাছ থেকে টাকা নিয়ে মেলায় এসে বড় বড় মাছ মিষ্টি পান সুপারি কিনে নিয়ে যান। মজার ব্যাপার হচ্ছে শাশুড়ি জামাইকে চুরি করে টাকা দেন। সেটা আবার শ্বশুর জানেন না।


আরও পড়ুন: চরাঞ্চলে গ্রামীণ নারী মেলায় মানুষের ঢল


মাদারগঞ্জে জলিল মিয়া বলেন, ‘জামাইকে মেলার দাওয়াত দিয়েছিলাম। আমার দুই মেয়ে, জামাই ও নাতি, নাতনিসহ আসছে। জামাইদের মেলার সেলামি দিয়েছি। বাড়িতে এখন উৎসব উৎসব লাগছে।’


জামাই মেলার আয়োজন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক মো. মোখলেছুর রহমান বলেন, ‘মেলার মূল উদ্দেশ হলো নাড়ির টান। জন্ম সূত্রে মনের টান, সন্তানের প্রতি মায়ের স্নেহের টান। এই শ্লোগানকে সামনে রেখে এটাকে আরও সুদৃঢ় করার জন্য সামাজিক বন্ধনকে সুদৃঢ় করতে মূলত এই আয়োজন। মেলায় ৩২০টি দোকান বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ২০০ কর্মী মেলার নিরাপত্তায় কাজ করছেন।’


আত্মীয়ের বন্ধনকে অটুট ও সুদৃঢ় করতেই এ মেলার আয়োজন। আমরা চাই শ্বশুর-শাশুড়ি, ভাই-বোনদের মধ্যে যেন আত্মিক সম্পর্ক বা বন্ধন দৃঢ় হয়। এই মেলার মাধ্যমে পারিবারিক বন্ধনের সৃষ্টি হচ্ছে। মেলায় প্রশাসন ও স্থানীয়দের ব্যাপক সহযোগিতা পাচ্ছি। আগামীতে আরও জাঁকজমকপূর্ণ মেলার আয়োজনের আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন