শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬ টায় উপজেলার ১০ নং ঝাউগড়া ইউনিয়নের রেহায় পলাশতলা গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও গ্রামবাসী বলেছেন, এই গ্রামের জনৈক বোরহানের বাড়িতে ভোর রাতে চুরি করতে গেলে লোকজন তাকে ধরে ফেলে। পরে তাকে গাছের সাথে বেঁধে রাখে। খবর পেয়ে আপপাশের লোকজন এসে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করে।
নিহত রিপন পলাশতলা গ্রামের মোজাম্মেল মিস্ত্রীর ছেলে।
এলাকাবাসী জানান, রিপন দীর্ঘ দিন ধরে এলাকায় চুরি করে আসছিল।
আরও পড়ুন: স্কুল ছেড়ে বাবার পেশায় গণপিটুনিতে নিহত রূপলালের ছেলে
নিহত রিপনের বাড়িতে চলছে পরিবারের আহাজারি। ছেলের মৃত্যুতে ৬৫ বছরের বৃদ্ধা মা পাগল প্রায়। বুকফাটা কান্নায় বলছেন, ‘এখন আমারে কে মা বলে ডাকবো, কে জর্দ্দা কিনে দিবো। আমার ছেলে ডারে মাইরা ফাইলাইছে। আমার ছেলে গাড়ি চাইলাই তো চট্রগ্রামে। আজ সকালে ওর চট্টগ্রাম থেকে রংপুরে পিট (গাড়িতে মালামাল) নিয়ে যাবার কথা। ভোরে বাবা আমার বাড়িতে যাবার কথা ছিল।’
বড় ভাই রফিকুল ইসলাম বলেন, রিপনের বিরুদ্ধে এলাকা আগে নানা কথা শুনতাম। এলাকার মানুষ চাপ দেয়ার পর আমরা তাকে বাড়ি থেকে বের করে দেই। এরপর ২ বছর আগে চট্রাগ্রামে চলে যায়। সেখানে গাড়ি চালিয়ে মাঝে মধ্যে বাড়িতে আসতো। বৃদ্ধ মাকে দেখতে বাড়িতে আসে। আজকে চট্টগ্রাম থেকে গাড়ি নিয়ে রংপুর যাবার কথা ছিল। রাতে বাজার থেকে বড় ভাই নিয়ে আসছে। বাড়ির সামনে এসে নূর ইসলামের বাড়িতে যাবার কথা বলে নেমে পড়ে। নুর ইসলামের কাছে কিছু টাকা পাবে। আমি দোকান বন্ধ করে আসার সময় দেখলাম নুর ইসলামের সাথে কথা বলছে। তারপরে ওখান থেকে ডেকে নিয়ে গাছের সাথে বেঁধে মারলো। আমরা আর কিছু জানি না। সকালে শুনলাম ওরে মাইরা ফাইলাছে।
আরও পড়ুন: চাঁদাবাজির অভিযোগে দুই যুবককে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ
মেলান্দহ থানার পরিদর্শক স্নেহশীষ রায় বলেন, রেহায় পলাশতলা গ্রামে ভোর ৪ টা থেকে ৬ টার মধ্যে বোরহান উদ্দিনের বাড়িতে রিপন মিয়া চুরি করতে ঢুকলে এলাকার লোকজন সংবাদ পেয়ে গণপিটুনি দেয়ার পর রিপনের মৃত্যু হয়। আমরা তার লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেছি। লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।