জান্নাতের প্রবেশদ্বার একটি নয়; এর রয়েছে কয়েকটি দরজা। মহান আল্লাহর প্রিয় বান্দা ও ফেরেশতারা এ সকল দরজা দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করবেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর মুত্তাকিদের জন্য রয়েছে উত্তম আবাস—চিরস্থায়ী জান্নাত। এর দরজাগুলো তাদের জন্য খোলা থাকবে। তারা সেখানে বসবে হেলান দিয়ে। সেখানে তারা নানারকম ফলমূল ও পানীয় চাইবে।’ (সুরা সাদ, আয়াত: ৪৯-৫১)
আরও পড়ুন: নবীজি (সা.)-এর মা-বাবার যেভাবে বিয়ে হয়েছিল
হজরত সাহল ইবনে সাদ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আছে, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জান্নাতে আটটি দরজা রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে একটি দরজার নাম ‘রাইয়ান’। কিয়ামতের দিন এ দরজা দিয়ে শুধু জাপালনকারীরা প্রবেশ করবে। তারা ছাড়া অন্য কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা করা হবে, রোজাপালনকারীরা কোথায়? তখন তারা উঠে দাঁড়াবে। তারা ছাড়া আর কেউ প্রবেশ করতে পারবে না। তারা প্রবেশ করলে, দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে। আর কারও প্রবেশ করার সুযোগ থাকবে না।’ (বুখারি: ১৮৯৬)
জান্নাতের মোট আটটি দরজা রয়েছে। দরজাগুলোর নাম --
১. বাবুস সালাত (নামাজের দরজা): যারা নামাজের ব্যাপারে সচেতন, আন্তরিকতার সঙ্গে নামাজ আদায় করে, তাদের সম্মানে জান্নাতের এ দরজার নামকরণ করা হয়েছে।
২. বাবুল জিহাদ (জিহাদের দরজা): যারা মহান আল্লাহর পথে তাদের জীবন ও সম্পদ দিয়ে লড়াই ও সংগ্রাম করে, তাদের সম্মানে জান্নাতের এই দরজার নামকরণ করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কবরে খেজুর ডাল পুঁতে দেয়া, ইসলাম কী বলে?
৩. বাবুর রাইয়ান (পরিতৃপ্তি লাভের দরজা): এই দরজা দিয়ে শুধু রোজা পালনকারীরা প্রবেশ করবে।
৪. বাবুস সাদাকা (দানের দরজা): মানুষের প্রয়োজনে যারা নিজেদের অর্থ-সম্পদ দিয়ে মানুষকে সাহায্য করেছে, তাদের সম্মানে জান্নাতের এই দরজার নামকরণ করা হয়েছে।
৫. বাবুল ঈমান (ঈমানের দরজা): এই দরজার নামকরণ করা হয়েছে তাদের সম্মানে, যারা বিনা হিসাবে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
৬. বাবুল-কাজিমিন আল-গায়িজ ওয়াল আফিনা আনিন্নাস (রাগ দমন ও মানুষের ভুল ক্ষমা করা লোকদের দরজা): এই দরজার নামকরণ করা হয়েছে তাদের সম্মানে, যারা অন্যের ভুলকে ক্ষমা করে এবং নিজেদের রাগকে নিয়ন্ত্রণ করে।
৭. বাবুর-রাজিয়িন (সন্তুষ্টদের দরজা): যারা সব অবস্থায় মহান আল্লাহর ওপরে সন্তুষ্ট এবং আল্লাহও যাদের ওপরে সন্তুষ্ট, আর-রাজিয়িন তাদের সম্মানে নির্মিত দরজা।
আরও পড়ুন: নবীজির আকিকা যেভাবে আদায় করা হয়
৮. বাবুত তওবা (ক্ষমাপ্রার্থনার দরজা): নিজেদের কৃতকর্মের জন্য অনুপ্রাণিত হয়ে যারা আল্লাহর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেছে, তাদের সম্মানার্থে জান্নাতের এই দরজার নামকরণ করা হয়েছে।