জাতিসংঘ অধিবেশনে ফিলিস্তিন প্রসঙ্গ তুলে আহমেদ আল-শারা দ্রুত সংঘাত বন্ধ করে দুই রাষ্ট্র বাস্তবায়নের আহ্বানও জানান। অভিযোগ করেন, সিরিয়ার পরিবর্তনশীল সময়ের সুযোগ নিয়ে ইসরাইল নতুন করে সংঘাত সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশন চলছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র ও সরকার প্রধানদের অংশগ্রহণে শুরু হয় সাধারণ বিতর্ক-পর্ব। বিতর্কের প্রথম দিনে ৩০ জনেরও বেশি বিশ্বনেতা বক্তব্য রাখেন।
এদিন জাতিসংঘে প্রথমবারের মতো বক্তব্য দেন সিরিয়ার আল-শারাও। এর মধ্যদিয়ে ৫৮ বছর পর সিরিয়ার কোনো প্রেসিডেন্ট জাতিসংঘে ভাষণ দিলেন। এর আগে সর্বশেষ ১৯৬৭ সালে তৎকালীন সিরীয় প্রেসিডেন্ট নুরেদ্দিন আল-আতাসি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বক্তব্য দেন।
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ভাষণের মধ্যদিয়ে ইতিহাস রচনা করেন আহমেদ আল শারা। তার বক্তব্যে উঠে আসে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ, ইসরাইলের সঙ্গে বিরোধ, দেশ পুনর্গঠন পরিকল্পনা। গাজা যুদ্ধ ইস্যুতে আল-শারা অবরুদ্ধ উপত্যকার ফিলিস্তিনিদের প্রতি সিরিয়ার সমর্থনের কথা জানিয়ে দ্রুত সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: একদা যে মার্কিন জেনারেলের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন, তার সঙ্গেই এক মঞ্চে আল-শারা
সিরিয়ার সঙ্গে গাজার তুলনা করে আল-শারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে যারা সিরীয় জনসাধারণের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে তাদের বিচার করা হবে। তার কথায়, ‘সিরিয়া যে কষ্ট ও যন্ত্রণার মধ্যে দিয়ে গেছে, তা কেউ কখনও অনুভব না করুক এই কামনা করি। আমরা সেই অনেক দেশের মধ্যে এক, যারা যুদ্ধ ও ধ্বংসের যন্ত্রণার সঙ্গে পরিচিত। এজন্য আমরা গাজার মানুষের পাশে দাঁড়াই। অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করার আহ্বান জানাই।’
সিরিয়া-ইসরাইল বিরোধের প্রসঙ্গ টেনে আল-শারা বলেন, তার সরকার ১৯৭৪ সালে তেল আবিবের সঙ্গে শান্তি ও সীমানা ইস্যুতে হওয়া চুক্তি মানতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সিরিয়ার পরিবর্তনশীল সময়ের সুযোগ নিয়ে ইসরাইল নতুন করে সংঘাত সৃষ্টির চেষ্টা করছে যা এই অঞ্চলকে খাদের কিনারায় নিয়ে যেতে পারে বলেও সতর্ক করেন শারা।
আল-শারা তার সরকারের এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে দেশের শাসন ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের জন্য গৃহীত প্রধান পদক্ষেপগুলোর রূপরেখা তুলে ধরেন। নতুন আইন ও প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা, প্রতিনিধি নির্বাচন এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সম্পর্ক স্থাপনের প্রত্যয় জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা এখন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা সম্পূর্ণভাবে তুলে নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। আমাদের অনুরোধ, তারা যেন আর সিরিয়ার জনগণকে শৃঙ্খলে আটকে না রাখে।’
]]>