আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন,
ফকির: ফকির যারা নিজেদের সাধারণ জীবন যাপন করতে পারে না। অনেক দুঃখে-কষ্টে কালাতিপাত করে- তাদেরকে জাকাত দেয়া হবে। হাদীস শরিফে বলা হয়েছে ‘তোমাদের মধ্যে যারা ধনী তাদের থেকে জাকাত নেয়া হবে, আর গরিবের মাঝে বিতরণ করা হবে।’
মিসকিন: সহায়-সম্বলহীন হৃতসর্বস্ব ব্যক্তি যার নিকট নগদ অর্থ বলতে কিছুই নেই- এমন লোকদের জাকাত দেয়া হবে।
কর্মকর্তা-কর্মচারী: জাকাতের পয়সা বা সম্পদ উসুল করার কাজে নিয়োজিত কর্মচারী কর্মকর্তাদের বেতন ভাতার কাজে জাকাতের অর্থ ব্যয় করা হবে। চাই এরা ধনী হোক অথবা গরিব। সর্বাবস্থায় এ জাকাতের থেকে তারা তাদের বেতন ভাতা গ্রহণ করতে পারবে।
আরও পড়ুন: যেসব জিনিসের উপর জাকাত ফরজ হয় না
কৃতদাসকে মুক্তকরার জন্য: কৃতদাস বা কৃতদাসীকে মুক্ত করার জন্য জাকাতের অর্থ ব্যয় করা যাবে।
মুআল্লাফাতে কুলুব: অমুসলিম বা কাফের সম্প্রদায়ের জন্য জাকাতের অর্থ ব্যয় করা যাবে। যাতে তারা ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়। তাদের অন্তরে ইসলাম ও মুসলমানদের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে। একমাত্র এ ধরনের কোন উদ্দেশ্য ছাড়া অমুসলিমদের মধ্যে জাকাতের অর্থ ব্যয় করা যাবে না।
ঋণগ্রস্ত: ঋণগ্রস্ত কোন ব্যক্তির ওপর তার ঋণের বোঝা কমানো বা ঋণ মুক্ত করার উদ্দেশ্যে জাকাতের অর্থ ব্যয় করা যাবে।
ফি সাবিলিল্লাহ খাত: ফি সাবিলিল্লাহ বলতে যারা আল্লাহর পথে বিভিন্নভাবে জিহাদরত তাদের সার্বিক সাহায্যার্থে জাকাতের অর্থ প্রদান করা যাবে।
আরও পড়ুন: জাকাতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য
মুসাফিরদের জন্য: কোন মুসাফির ব্যক্তি পথিমধ্যে অর্থাভাবে বিপদগ্রস্থ বা অসহায় হয়ে পড়েছে। বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছার মত কোন সম্বল তার সঙ্গে নেই। এমতাবস্থায় জাকাতের অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করা বা লোকটির জন্য জাকাতের অর্থ গ্রহণ করা সম্পূর্ণ বৈধ।
জাকাত আদায় করার দায়িত্ব
জাকাত আদায় করার দায়িত্ব সরকার বা রাষ্ট্রের। কিন্তু সমকালীন দুনিয়ায় ইসলামী অনুশাসন না থাকায় কোথাও জাকাত ভিত্তিক অর্থনীতি চালু নেই। যার কারণে রাষ্ট্রীয়ভাবে তো বটেই ব্যক্তি পর্যায়েও জাকাত আদায়ের ব্যাপারে উদাসীনতা দেখা যায়। কিয়ামতের কঠিন বিপদের দিনে আল্লাহর পাকড়াও থেকে বাঁচতে হলে জাকাত আদায় করতে হবে অবশ্যই।
এ ক্ষেত্রে কোনো অজুহাত আল্লাহ তাআলার কাছে গৃহীত হবে না। প্রতাপশালী বিচারকের সামনে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হলে অবশ্যই জাকাত আদায় করতে হবে। যেভাবে হোক না কেন জাকাত দিতেই হবে- রাষ্ট্র বা সরকার জাকাত আদায় করতে আসুক বা না আসুক। মসজিদ আছে, ইমাম নেই বলে যেমন নামাজ থেকে মাফ পাওয়া যায় না জাকাত উসুলকারী রাষ্ট্র বা লোক নেই বলে জাকাত আদায়ের কঠিন ফরজ থেকেও পলায়নের সুযোগ নেই।
আরও পড়ুন: যেসব জিনিসের ওপর জাকাত ফরজ হয়
ব্যক্তিগত উদ্যোগে হলেও জাকাত দিতে হবে। অন্যথায় জাকাত অনাদায়ের যে শাস্তি নির্ধারিত আছে তার অবধারিত কবল থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় নেই। আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সবাইকে বুঝবার এবং তদনুযায়ী আমল করবার তাওফীক দান করুন। আমীন
]]>