জলাবদ্ধতা, পথহীনতা ও নিরাপত্তাহীনতায় লেমুছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়

৪ সপ্তাহ আগে
খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলার প্রত্যন্ত লেমুছড়ি গ্রামে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে চলা লেমুছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়টি নানা সংকটে জর্জরিত হয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান চলাচলের পথটি বছরের প্রায় অর্ধেক সময় পানির নিচে তলিয়ে থাকায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়দের।

১৯৭৫ সালে স্থানীয় জনসাধারণের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যালয়টি দীর্ঘদিন ধরেই দুর্গম এলাকার শিক্ষার্থীদের শিক্ষার একমাত্র আশ্রয়স্থল। তবে বর্তমানে বিদ্যালয়ের চলাচলের রাস্তা, ছাত্রাবাস, নিরাপত্তা ও পরিবেশ সবকিছু মিলিয়ে এক গভীর সংকট তৈরি হয়েছে।


বিদ্যালয়ের পাশ দিয়েই একসময় ছিল খাগড়াছড়ি-মহালছড়ি-রাঙ্গামাটির মূল সড়ক। তবে নতুন সড়ক নির্মাণের ফলে বিদ্যালয়টি মূল সড়ক থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পড়ে গেছে। পরিত্যক্ত পুরাতন সড়কটির এখন বেহাল দশা। এর ওপর, কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর বেড়ে গেলে ও বর্ষার বৃষ্টির কারণে প্রায় ৪ থেকে ৫ মাস বিদ্যালয়ের একমাত্র রাস্তা তলিয়ে যায়।


এ সময়টায় নৌকা ছাড়া বিদ্যালয়ে আসার কোনো উপায় থাকে না। এতে পাঠদান কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাস করতে না পারায় তাদের শিক্ষা কার্যক্রমে দেখা দেয় স্থবিরতা।


এ বিদ্যালয়ে আশেপাশের দুর্গম পার্বত্য অঞ্চল থেকেও শিক্ষার্থীরা আসে। কিন্তু আবাসনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় তারা যথাসময়ে ক্লাসে উপস্থিত হতে পারে না। ছাত্রাবাসের অনুপস্থিতি তাদের পড়াশোনাকে বাধাগ্রস্ত করছে।


এছাড়াও, বিদ্যালয়টির চারপাশে কোনো বাউন্ডারি দেয়াল নেই। ফলে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বাউন্ডারি দেয়াল না থাকায় বহিরাগতদের অবাধ চলাচলও একটি উদ্বেগের কারণ।


আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে ১৯ দোকানির স্বপ্ন পুড়ে ছাই


বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জীবন প্রদীপ চাকমা বলেন, বিদ্যালয়টি ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও এখনো আমরা মৌলিক সুবিধাগুলো থেকে বঞ্চিত। বর্ষাকালে রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা প্রায় ছয় মাস বিদ্যালয়ে আসতে পারে না। নিরাপত্তাহীনতা ও ছাত্রাবাসের অভাব শিক্ষার পরিবেশকে ব্যাহত করছে। আমরা সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ আশা করি।


স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) খাগড়াছড়ি নির্বাহী প্রকৌশলী তৃপ্তি শংকর চাকমা বলেন, 'পুরাতন রাস্তাটি মূলত উপজেলা রোড, যা পরিত্যক্ত ছিল। ধাপে ধাপে সেটি উন্নয়নের চেষ্টা চলছে। কিছু অংশে কার্পেটিং হয়েছে। সড়কটির দুইটি ব্রিজের ডিজাইনও সম্পন্ন হয়েছে। ভবিষ্যতে পুরো সড়ক উঁচু করে পুনঃনির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।'


ছাত্রাবাসের বিষয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের সদস্য (পরিকল্পনা) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, 'বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি আমাদের কাছে আবেদন করে, তবে সেটি আমরা গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করব।'

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন