সরেজমিনে দেখা যায়, ফেটে চৌচির জড়াজীর্ণ পরিত্যক্ত ভবন। মাঝে মধ্যেই খুলে পড়েছে পলেস্তারা। এমন ঝুঁকিপূর্ণ ছোট একটি অবকাঠামোর মধ্যে চলছে কিশোরগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষের নাগরিক সেবা প্রদানের কার্যক্রম।
স্থানীয়রা জানান, দীর্ঘ পুরাতন এ অবকাঠামোর মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে চলছে ইউনিয়ন পরিষদের সার্বিক কর্মকাণ্ড। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটির দেয়াল ও ছাদ ফেটে গেছে। মাঝে মধ্যেই হঠাৎ দেয়াল ও ছাদের পলেস্তারা খুলে পড়ছে আসবাবপত্র ও মেঝের উপরে। ভয়ে অনেকে ভিতরে থাকার সাহস পান না। স্থানীয় বাসিন্দা সামিউল ইসলাম জানান, ইটের টুকরা, সিমেন্টের প্লাস্টার খুলে পড়ে পরিষদের ভিতরে কোন কাজের জন্য গেলে ভয় লাগে। একসঙ্গে ১০/১২ জন ঢুকলে বাকিদের বাহিরে থাকতে হয়। কোনো কাজ ঠিক ভাবে করা যায় না।

তবে বিকল্প ভবন না থাকায় বাধ্য হয়ে ছোট ওই ভবনের ভিতরেই চলছে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম, চেয়ারম্যানসহ ইউপি সদস্যদের বসা, উন্নয়ন কার্যক্রমের সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ইউপি সচিবের দাফতরিক কাজ, ডিজিটাল তথ্য সেবাসহ সব কার্যক্রম। একটি কাজ করতে গিয়ে বন্ধ রাখতে হচ্ছে অন্য একটি সেবা। আর ভিতরে ৮ থেকে ১০ জন লোকের বেশি ধারণ ক্ষমতা না থাকায় খোলা আকাশের নিচে রোদ বৃষ্টিতে ভিজে দাঁড়িয়েও প্রয়োজনীয় কাজ সারতে হচ্ছে এই ইউনিয়নের জনগণকে।
আরও পড়ুন: মাদারীপুরে ঝুঁকি নিয়েই চলছে ডাকঘরের কার্যক্রম
এতে ব্যাহত হচ্ছে জনগণের কাঙ্ক্ষিত সেবা। মুখ থুবড়ে পড়েছে ইউনিয়ন পরিষদের সব কার্যক্রম। জনগণের পাশাপাশি ভবন না থাকায় বিপাকে পড়েছেন জনপ্রতিনিধিসহ ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যাক্তিরাও। ভবনের অভাবে সরকারি বরাদ্দকৃত বিভিন্ন ত্রাণ, পরিষদের ব্যবহৃত কম্পিউটারসহ বিভিন্ন দরকারি কাগজপত্র বৃষ্টিতে ও যত্রতত্র রাখার কারণে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
কিশোরগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. আনারুল ইসলাম আকন্দ জানান, বৃষ্টি এলে ছাদ দিয়ে পানি পড়ে গুরুত্বপূর্ণ কাগজ ও আসবাবপত্র ভিজে যায়। এক ছাদের নিচে একটি ইউনিয়নের সব কার্যক্রম চালাতে গিয়ে বিপাকে পড়তে হচ্ছে।
কিশোরগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবু বকর সিদ্দিক জানান, দাফতরিক কাজের সমস্যার পাশাপাশি ভিজিডি, ভিজিএফসহ সরকারি বিভিন্ন ত্রাণ বিতরণে সমস্যায় পড়তে হয়। পরিষদের গোডাউনে চালের ধারণ ক্ষমতা না থাকায় পাশের স্কুল ঘনে বা অন্য কোথাও রাখতে হয়। দ্রুত পরিষদের ভবন প্রয়োজন।
গাইবান্ধা জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক এ. কে. এম. হেদায়েতুল ইসলাম জানান, পরিষদের ভবনটি একেবারে জরাজীর্ণ হওয়ায় এটি নতুন করে মেরামত সম্ভব হচ্ছে না। পরিষদের একটি ভবন খুবই জরুরি। জমি সংক্রান্ত কিছু জটিলতা রয়েছে দ্রুত নিরসন করে নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ১৯৬২ সালে কিশোরগাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের ৪ রুমের এ ভবনটি নির্মাণ করা হয়।
]]>
১ সপ্তাহে আগে
৪






Bengali (BD) ·
English (US) ·