জমে উঠেছে খুলনার বৃক্ষমেলা

৪ সপ্তাহ আগে
খুলনা সার্কিট হাউস মাঠের টেনিস গ্রাউন্ডের পাশে চলছে ২১ দিনব্যাপী বৃক্ষমেলা। জাতীয় গাছ আম, জাতীয় ফল কাঁঠাল, আর ফুলের রাণী গোলাপসহ দেশি-বিদেশি শতাধিক প্রজাতির গাছগাছালিতে সেজে উঠেছে মেলা প্রাঙ্গণ। তরুণ প্রজন্মকে গাছের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে এবং আগামীর সবুজ বাংলাদেশ গড়ার বার্তা নিয়ে আয়োজিত এ মেলা ইতিমধ্যে দর্শনার্থীদের দারুণ সাড়া ফেলেছে।

গত ৭ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে এবারের মেলা। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিনা টিকিটে সবার জন্য উন্মুক্ত এই মেলায় অংশ নিয়েছে ৬১টি প্রতিষ্ঠান, যার মধ্যে ১০টি সরকারি।


মেলার নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সূত্রে জানা গেছে, ১৪ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ১৩ হাজার গাছের চারা বিক্রি হয়েছে, যার আর্থিক মূল্য ১২ লাখ টাকারও বেশি। মেলায় সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ফলজ ও ফুলের চারা।


সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মেলায় দেশি ফলের মধ্যে রয়েছে আম, কাঁঠাল, লটকন, জাম, সফেদা, কাজুবাদাম, করমচা, জামরুল, আমলকী, আতা, গাব, জলপাই ও আঙুর। আর বিদেশি ফলের চারার মধ্যে রয়েছে অ্যাভোকাডো, রাম্বুটান, পার্সিমন, লঙ্গান, ডুরিয়ান। বিভিন্ন নার্সারিতে শ্রীলঙ্কা, কেরালা ও ভিয়েতনামি জাতের নারকেল চারা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও মেলায় আছে এলাচি, দারুচিনি, তেজপাতা, গোলমরিচ ও চুইঝালের মতো মসলা জাতীয় গাছ।


ফুলপ্রেমীদের জন্য গোলাপ, জবা, বেলি, হাসনাহেনা, চামেলি, রঙ্গন, কাঠগোলাপ, মাধবীলতা, করবীসহ অসংখ্য প্রজাতির ফুলের চারা বিক্রি হচ্ছে স্টলজুড়ে। স্টলগুলোর সামনের খোলা মাঠ জুড়ে সাজানো গাছগাছালি যেন এক টুকরো সবুজ শোভা।


বৃক্ষমেলায় অংশ নেয়া নিজাম নার্সারি স্বত্বাধিকারী আব্দুল্লাহ জানান, তার স্টলে ৪০ টাকা থেকে শুরু করে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত মূল্যের গাছ রয়েছে। তিনি জানান, তাদের স্টলে প্রায় ১৫ জাতের পেয়ারার চারা রয়েছে। কাঠজাত গাছের মধ্যে আছে মেহগনি ও সিরিজ গাছ, যদিও চাহিদা তুলনামূলক কম।

আরও পড়ুন: খুলনায় বৃক্ষমেলা শুরু ৭ জুলাই, চলবে ২১ দিন

গ্রিন গ্লোব নার্সারির এক বিক্রেতা বলেন, চুইঝাল গাছে ফুল হয় না, এ তথ্য অনেকেই জানেন না। তাই আমরা জানাতে সচেষ্ট। নয়নতারা নার্সারির আলতাফ হোসেন জানান, “সবধরনের চারা ভালোই বিক্রি হচ্ছে, তবে আমের চারা একটু বেশি।


বৃক্ষমেলায় ঘুরতে আসা নারী দর্শনার্থী ফাতেমা তুজ জোহরা বলেন, ‘প্রতি বছর মেলায় আসি। এ বছর প্রথম আসলাম। বাসার সামনে অনেকটা ফাঁকা জায়গা আছে। আজ দেখে গেলাম, পরিকল্পনা করছি বাসার সামনে ওই ফাঁকা জায়গায় কি কি ফলজ আর ফুল গাছ লাগানো যায়, আগামী দিন এসে গাছ ক্রয় করবো।
বেশ কয়েকটি পেয়ারা গাছ কিনেছেন শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, বৃক্ষমেলায় আসলেই মন ভালো হয়ে যায়। দু’টি পেয়ারা গাছ, একটি লেবু গাছ কিনলাম। মেয়ের জন্য ফুল গাছও কিনেছি।’


সুন্দরবনের স্টলে শোভা পাচ্ছে ম্যানগ্রোভ সিলভি কালচারের গাছ সুন্দরী, খলসী, গর্জন, পশুর, ধুন্দুল, এমনকি বাঘের খুলি ও সংরক্ষিত মাছও দেখানো হচ্ছে। সচেতনতামূলক লিফলেটও সরবরাহ করা হচ্ছে।


মেলার আয়োজন সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এজেডএম হাসানুর রহমান বলেন, ‘এ বছর মেলায় ক্রেতা-দর্শনার্থীদের সাড়া বেশ ভালো। প্রথম দিন থেকেই মেলায় বিক্রি হচ্ছে, প্রতিদিনিই বিক্রির পরিমান বাড়ছে। বৃক্ষমেলার মাধ্যমে প্রতিটি ঘরে সুবজায়ন হবে।’ আগামী ২৮ জুলাই এ মেলা শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন