বংশাল থানা সূত্রে জানা গেছে, তদন্তে এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে উঠে এসেছে এক জটিল প্রেমের দ্বন্দ্ব। প্রেমিকা বর্ষার সঙ্গে অভিযুক্ত মাহির রহমানের দীর্ঘ ৯ বছরের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু কিছুদিন আগে বর্ষা জোবায়েদ হোসাইনের প্রতি দুর্বল হয়ে পড়েন। এ ঘটনায় মাহির ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন।
জানা যায়, সম্পর্কের টানাপোড়েনের এক পর্যায়ে বর্ষা প্রথমে মাহিরকে প্রত্যাখ্যান করলেও পরে আবার যোগাযোগ করে জানান, জোবায়েদকে আর ভালো লাগে না তার। তখনই জোবায়েদকে হত্যার পরিকল্পনা করেন বর্ষা ও মাহির।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বর্ষা হত্যার বিষয়টি অস্বীকার করলেও মাহির ও বর্ষাকে মুখোমুখি করলে তারা পুরো ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন, বলে নিশ্চিত করেছেন বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)।
আরও পড়ুন: জবি ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ
রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর আরমানিটোলায় টিউশনিতে গিয়ে খুন হন জবি পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯–২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জুবায়েদ হোসাইন। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আরমানিটোলার পানির পাম্প গলির ‘রওশন ভিলা’ ভবনের সিঁড়ি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
পুলিশের বরাত দিয়ে জানা গেছে, সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনাস্থল থেকে দুজন তরুণকে পালিয়ে যেতে দেখা যায়, যদিও তাদের মুখ পরিষ্কারভাবে দেখা যায়নি। ঘটনার পর থেকে টিউশনি করা ছাত্রী বর্ষাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয় পুলিশ। পরে তার তথ্যের ভিত্তিতে মাহির রহমানসহ আরও তিনজনকে আটক করা হয়।
ডিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) দুপুর পৌনে ১২টায় ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস.এন. মো. নজরুল ইসলাম।’
ময়নাতদন্ত শেষে সোমবার দুপুরে জুবায়েদের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে। সেখানে সহপাঠী ও শিক্ষকরা তার প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পরে মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়।
জুবায়েদ ছিলেন কুমিল্লা জেলা ছাত্রকল্যাণ পরিষদের সভাপতি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহপাঠীদের কাছে একজন মেধাবী ও ভদ্র শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচিত।
]]>