ছেলের বউয়ের পরকীয়ার জেরে খুন হলেন শ্বশুর

৬ দিন আগে
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় জাহাঙ্গীর হোসেন (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে কোদাল দিয়ে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় আহসান নবী (৩৫) নামে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার (৪ জানুয়ারি) দুপুর ২:৩০ মিনিটের দিকে উপজেলার জিন্দারপুর ইউনিয়নের চরবাখরা গ্রামে এমন ঘটনা ঘটে। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত আহসান নবীকে আটক করে।


নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য জয়পুরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠিয়েছে । অভিযুক্ত আহছান নবীকে চিকিৎসা দিতে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে পাহারায় রয়েছে পুলিশ ।


নিহত জাহাঙ্গীর হোসেন উপজেলার জিন্দারপুর ইউনিয়নের বেলগাড়িয়া গ্রামের মৃত মোজাম মন্ডলের ছেলে। ঘাতক আহসান নবী একই গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে।


পরিবারের সদস্যরা জানায়, নিহত জাহাঙ্গীরের ছেলে সবুজ হোসেনের স্ত্রী সুফিয়া বেগমের বিয়ে হয়  প্রায় ৬ বছর আগে। গত ৪ বছর থেকে সুফিয়া বেগমের সাথে পরকীয়ার সর্ম্পক গড়ে তোলে একই গ্রামের সামিদুল ইসলাম। পরকীয়ার সর্ম্পক চলাকালীন অবস্থায় সামিদুল ইসলাম সুফিয়া বেগমকে কুপ্রস্তাব দেয়। সুফিয়া বেগম সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন এবং তার সংসারে বিভেদ সৃষ্টি না করার জন্য অনুরোধ করেন। সামিদুল সে অনুরোধ না শুনে সুফিয়া বেগমের সঙ্গে তার কাছে থাকা মোবাইলের বিভিন্ন রেকর্ড গ্রামের মানুষের কাছে শোনান। শনিবার জাহাঙ্গীর তার বাড়িতে স্ত্রী, ছেলে সবুজ ও ছেলের বউকে গালিগালাজ করে মাঠে আলুর কাজ করতে যায়। পরে ছেলে সবুজও মাঠে গিয়ে বাবার সঙ্গে কাজ করেন। এরপর দুপুরে বাবা-ছেলে মাঠ থেকে বাড়িতে আসার জন্য রওনা দেন। পথিমধ্যে গ্রামের এক রাস্তায় সামিদুলের বন্ধু আহছান নবি ও মোস্তফাসহ কয়েকজনের সঙ্গে জাহাঙ্গীরের দেখা হয়। সেখানে তারা জাহাঙ্গিরের ছেলের স্ত্রীর সমর্পকের বিভিন্ন কথা বলতে থাকেন তারা। জাহাঙ্গীর সেখানে তাদের পারিবারিক বিষয়ে কথা বলতে নিষেধ করে। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে আহছান নবির হাতে থাকা কোদাল দিয়ে তার পিঠ ও ঘাড়ে কোপ মারে। এ সময় জাহাঙ্গীর মাটিতে পড়ে গেলে সে পা দিয়ে বুকে গুড়াতে থাকে। সেখানেই তার মৃত্যু হয়।


আরও পড়ুন: অর্থের দ্বন্দ্বে হত্যা করা হয় যুবদল নেতাকে, চিরকুটের রহস্য উদঘাটন


জাহাঙ্গীরের ছেলে সবুজ হোসেন জানান, দুপুরের দিকে আহছান নবি ও মোস্তফাসহ কয়েকজন তার স্ত্রীর সমর্পকে বিভিন্ন কথা বলতে থাকলে বাবা তাদের নিষেধ করে। এক পর্যায়ে আহছান নবি ও মোস্তফাসহ কয়েকজন তাকে মারপিট করে। এরপর সে আবারও বাবার বুকে পা দিয়ে গুড়ি মারতে থাকে। আমার চোখের সামনে আহসান নবী আমার বাবাকে হত্যা করেছে। আমি বাবা হত্যার বিচার চাই।


ওই গ্রামের একাধিক ব্যক্তি বলেন, জাহাঙ্গীর আসলেই একজন নীরিহ মানুষ। ছোট থেকে বড় হয়েছে, কখনও ওর ঝগড়া-বিবাদ দেখিনি। আজ এভাবে ওর মৃত্যু হবে এটা আমরা কেউ মেনে নিতে পারছিনা। আমরা আহসান নবীসহ জড়িতদের কঠিন শাস্তির দাবী করছি।


হত্যার বিষয়ে কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন বলেন, নিহতের খবর পেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। পরিদর্শন শেষে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। এছাড়াও রাতে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন