যুক্তরাষ্ট্রে লক্ষ লক্ষ চীনা শিক্ষার্থীর একটি বিস্তৃত অংশের উপর যদি এই সিদ্ধান্ত প্রয়োগ করা হয়, তাহলে তা মার্কিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর আয়ের একটি প্রধান উৎস বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ব্যাহত করতে পারে মার্কিন প্রযুক্তি সংস্থাগুলোর জন্য মেধাবী কর্মী পাওয়াও।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন তাদের কঠোর অভিবাসন এজেন্ডা পূরণের বিস্তৃত প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে অভিবাসী বিতাড়ন বৃদ্ধির পর এবার বিদেশি শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করার জন্য উঠে পড়ে লেড়েছে।
এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিও বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মিলে চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা যাচাই করবে। বিশেষত চীনা কমুউনিস্ট পার্টি বা গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা আমাদের নজরে রয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিদেশি নাগরিকদের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসানীতি
ভবিষ্যতে চীন ও হংকংয়ের শিক্ষার্থীদের ভিসা প্রদানের ক্ষেত্রে বাড়তি কড়াকড়ি আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলেও জানান রুবিও। ওয়াশিংটনে অবস্থিত চীনা দূতাবাস তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
মার্কিন সরকারের ২০২৩ সালের তথ্য মতে, ওই বছর যুক্তরাষ্ট্রে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৫৪ শতাংশ ছিল ভারতীয় ও চীনা। মার্কিন অর্থনীতিতে তাদের অবদান ছিল পাঁচ হাজার কোটি ডলার অর্থমূল্যের বেশি।
এর আগে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থী গ্রহণের অনুমতি বাতিল করেন ট্রাম্প। পাশাপাশি প্রশাসন জানায়, ইতোমধ্যে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীরা যেন অন্য কোথাও বদলির চেষ্টা করেন। তখন চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট করে জানায়, বিদেশে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় তারা অঙ্গীকারবদ্ধ।
গত মঙ্গলবার (২৭ মে) ট্রাম্প প্রশাসন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসগুলোকে শিক্ষার্থী ও বিনিময় কর্মসূচির ভিসার সাক্ষাৎকারের শিডিউল দেয়া স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। বিদেশি আবেদনকারীদের জন্য শিগগিরই কঠোর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যাচাইয়ের প্রক্রিয়া চালু করার প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই এই নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলে খবরে বলা হয়।
আরও পড়ুন: বিদেশি শিক্ষার্থীদের মার্কিন ভিসা নিয়ে দুঃসংবাদ
মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত কোনো অতিরিক্ত শিক্ষার্থী বা এক্সচেঞ্জ ভিজিটর ভিসার অ্যাপয়েন্টমেন্ট নির্ধারণ করা যাবে না। এই প্রক্রিয়ার আওতায় আবেদনকারীদের ইনস্টাগ্রাম, এক্স, টিকটকসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে করা পোস্ট, শেয়ার ও মন্তব্য খতিয়ে দেখা হবে। যাতে করে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ কিছু রয়েছে কি না, তা নিশ্চিত হওয়া যায়।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, নতুন এই নির্দেশনা মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির ক্ষেত্রে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে যেসব বিশ্ববিদ্যালয় বিদেশি শিক্ষার্থীর ওপর আর্থিকভাবে নির্ভরশীল।