চিংড়ি শিল্পে নতুন সম্ভাবনা: আশার আলো দেখাচ্ছে রামপুরা চিংড়ি এস্টেট

১ সপ্তাহে আগে
কক্সবাজারের চিংড়ি চাষিদের নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে চকরিয়া রামপুরা চিংড়ি এস্টেট। সাসটেইনেবল কোস্টাল এবং মেরিন প্রকল্পের আওতায় ৭ হাজার একর চিংড়ি স্টেটের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।

মৎস্য অধিদফতর বলছে, অবকাঠামো উন্নয়নের ফলে এই স্টেট থেকে চিংড়ি চাষ বাড়বে প্রায় তিনগুণ। আর চিংড়ি সিটি প্রকল্পের কাজ শেষ হলে চিংড়ি শিল্পের নতুন যুগের সূচনা করবে বাংলাদেশ।

 

কক্সবাজারের চকোরিয়ার রামপুরায় ৭ হাজার একর সরকারি চিংড়ি প্রকল্প। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর আর্থ সামাজিক উন্নয়নে এবং চিংড়ি রফতানি বাড়াতে প্রায় পাঁচ দশক আগে এই স্টেটে চিংড়ি চাষ শুরু হয়। দুর্গম এই চিংড়ি এস্টেট দীর্ঘদিন সংস্কারের অভাবে আধুনিক চিংড়ি চাষে অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সংস্কারে এগিয়ে আসে বিশ্ব ব্যাংক।

 

বিশ্বব্যাংকের টাকায় ২০১৮ সালে সাসটেইনেবল কোস্টাল এবং মেরিন প্রকল্পের আওতায় এই চিংড়ি এস্টেটের উন্নয়ন কাজ শুরু করে মৎস্য অধিদফতর। বাস্তবায়ন কঠিন, পদে পদে নানা প্রতিকূলতা দেখে একসময় এ প্রকল্পের অর্থ ফের নেয়ারও মনোভাব দেখায় বিশ্বব্যাংক। কিন্তু হার মানতে নারাজ প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।

 

আরও পড়ুন: বাগেরহাটে ‘সাদা সোনায়’ মড়ক, উৎপাদন কমায় ক্ষতির মুখে চাষিরা

 

নানা চ্যালেঞ্জ, সীমাবদ্ধতা শর্তেও এস্টেট প্রকল্পের সুরক্ষায় ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ বেড়িবাঁধ সংস্কার ও নির্মাণ শেষ হয়েছে। শেষ হয়েছে খাল খনন কাজও। পানি ব্যবস্থাপনায় ২৩টি স্লুইস গেটের কাজও শেষ প্রায় ৮০ শতাংশ। সব মিলিয়ে পুরো প্রকল্প এখন দৃশ্যমান।

 

প্রকল্পের সরকারি ঠিকাদার কাজি লেমন বলেন, মন্ত্রণালয়ের সচিব ও বিশ্বব্যাংকের প্রতিনিধি দল শুরুতে জানিয়েছিল কাজটি সম্ভব নয়। তবে এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়ে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে সক্ষম হয়েছেন তারা।

 

প্রজেক্ট পরিচালক তৌফিকুর রহমান জানান, এই এলাকায় উঁচু জায়গা নেই। ফলে অনেক সময় পানি জমে যানবাহন নষ্ট হয়ে গেছে। তারপরও কাজ থেমে থাকেনি।

 

চিংড়ি চাষিদের উন্নত চাষ পদ্ধতি হাতে-কলমে শেখাতে এ প্রকল্পে রয়েছে ৪টি নার্সারি ও করা হয়েছে ১৩টি গ্রেআউট পুনঃখনন। এছাড়া প্রকল্প রক্ষণাবেক্ষণে রয়েছে অফিস ভবনসহ আনুষঙ্গিক অবকাঠামো। যার কাজও শেষ প্রায় ৯৫ শতাংশ।

 

আরও পড়ুন: উৎপাদন কমলেও চিংড়ি রফতানিতে স্বস্তি, তবে স্থায়িত্ব নিয়ে শঙ্কা

 

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, উন্নয়ন কাজের ফলে এই প্রকল্পে চিংড়ি চাষ বাড়বে প্রায় তিনগুণ। আর চিংড়ি সিটি প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এ শিল্পের নতুন যুগের সূচনা হবে।

 

প্রকল্প পরিচালক জিয়া হায়দার চৌধুরী বলেন, এ উদ্যোগের মাধ্যমে ৭ হাজার একরের চিংড়ি উৎপাদন প্রকল্প থেকে তিন গুণ বেশি উৎপাদন সম্ভব হবে, যা রফতানিও করা যাবে।

 

উপ-প্রকল্প পরিচালক মনিষ কুমার মণ্ডল জানান, বর্তমানে ৭ হাজার একর চিংড়ি প্রকল্পের পাশাপাশি আরও ২১ হাজার একর এলাকায় চাষ হচ্ছে। এই ২৮ হাজার একর জমিকে নিয়ে তৈরি হচ্ছে একটি দীর্ঘমেয়াদি মাস্টারপ্ল্যান, যা ৩০ বছরের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। এর মাধ্যমে বার্ষিক আরও ১ লাখ ২৫ হাজার মেট্রিক টন চিংড়ি উৎপাদন করা সম্ভব।

 

সংশ্লিষ্টরা আরও বলছেন, অক্টোবরে শেষ হবে পুরো প্রকল্পের কাজ। এর ফলে টেকসই উন্নয়ন ঘটবে দেশের উপকূলীয় ও সামুদ্রিক মৎস্য খাত।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন