ইরানের পরমাণু কর্মসূচিতে রাশ টানতে দেশটির ওপর আবারও নিষেধাজ্ঞা ফিরিয়ে আনতে তৎপর হয়ে উঠেছে ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি বা ই-থ্রি। জাতিসংঘেও তাদের এই প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। এতে ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে তেহরানের ওপর আবারও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা ফিরে আসবে। দেশগুলোর এই পদক্ষেপের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান।
শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) আন্তর্জাতিক সায়েন্স অলিম্পিয়াডের পদকজয়ীদের সম্মাননা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পেজেশকিয়ান জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের শুক্রবারের ইরানবিরোধী সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, তিনি বহুবার দেখেছেন কিছু শক্তিধর দেশ ইরানের পথ রুদ্ধ করার চেষ্টা করেছে।
আরও পড়ুন: ইসরাইলের বিরুদ্ধে এক হয়ে লড়তে সৌদি আরবকে হিজবুল্লাহ’র প্রস্তাব
তিনি বলেন, কিন্তু মন আর চিন্তাধারা যখন বাধার মুখে পড়ে, তখন হয় পথ খুঁজে নেয়, নয়তো নতুন পথ সৃষ্টি করে। চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার মূল চাবিকাঠি হলো আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ় সংকল্প। অপদার্থরা আমাদের পথ আটকে দিতে পারবে না।
তিনি দাবি করেন, এই সিদ্ধান্ত কেবল পারমাণবিক চুক্তির দরজা বন্ধ করবে তা নয়। উল্টো আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্যও বিপজ্জনক প্রমাণিত হবে।
চায়না মিডিয়া গ্রুপকে দেয়া সাক্ষাৎকারে পেজেশকিয়ান জোর দিয়ে বলেন, ইরান কখনো যুদ্ধ শুরু করেনি। ইরান সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে থেকে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও মানবাধিকারের নীতি মেনে চলায় বিশ্বাসী। তবে, যেকোনো আক্রমণের মুখে শক্ত হাতে জবাব দিতেও পিছপা হবে না তার দেশ।
আরও পড়ুন: ইরানের বিরুদ্ধে ১২ দিনের যুদ্ধে ৫০ কোটি ডলারের মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস: রিপোর্ট
একইদিন তেহরান জানায়, স্ন্যাপব্যাক কার্যকর হলে আন্তর্জাতিক আণবিক সংস্থার সঙ্গে হওয়া চুক্তিও ভেঙে দেবে দেশটি। তাদের দাবি, ইউরোপীয় দেশগুলোর ‘স্ন্যাপব্যাক’ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অবৈধ। নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপিত হলে শুধু আইএইএ চুক্তি ভঙ্গই নয়, আরও কঠোর প্রতিক্রিয়া আসবে বলে হুঁশিয়ারি দেয় তারা।
এ প্রেক্ষাপটে প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান চীনের ভূমিকাকে কৌশলগত বলে অভিহিত করেছেন। গত বছর বেইজিংয়ের মধ্যস্থতায় তেহরান ও রিয়াদ দুই দেশে তাদের দূতাবাস পুনরায় চালু করতে সম্মত হয়। প্রেসিডেন্টের মতে, এই পুনর্মিলন কেবল তেহরান-রিয়াদ নয়, বরং গোটা অঞ্চলের শান্তি ও উন্নয়নের রূপরেখা। চীনের এই ভূমিকার প্রশংসা করেন ইরানি প্রেসিডেন্ট।
]]>