সরেজমিনে গোমস্তাপুর উপজেলার রহনপুর, পার্বতীপুর, রাধানগর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, ক্ষতিগ্রস্ত এসব ঝরে পড়া আম বাধ্য হয়েই ৩-৪ টাকা কেজি দরে আচারের আম হিসেবে বিক্রি করছেন চাষিরা। এছাড়াও গ্রামের কিশোর-তরুণরাও এসব আম কুড়িয়ে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করছেন একই দামে।
ব্যবসায়ীরা এসব আম জোগাড় করে ট্রাক, পিকআপে করে সবজি ও আচারের জন্য এসব আম নিয়ে যায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।
গোমস্তাপুর উপজেলার পার্বতীপুর ইউনিয়নের আড্ডা গ্রামের আমচাষি সিফাত রানা বলেন, আর কয়েকদিন পরেই আমগুলো বাজারজাত করতাম। পুরো মৌসুমের পরিশ্রম সম্পূর্ণ বৃথা চলে গেল। একেবারে শেষ করে ফেলেছে মাত্র আধা ঘণ্টার ঝরে। দেড়শ টাকা কেজি দরের আম এখন তিন থেকে চার টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। একেবারেই নিঃস্ব হয়ে গেছি। পথে বসার উপক্রম হয়েছে।
আমচাষি তারেক রহমান বলেন, গত রাতে এই উপজেলায় ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে। এতে গোপালভোগ, আশ্বিনা, খিরসাপাতসহ ঝড়ে পড়েছে বিপুল পরিমাণ আম। তবে এখনও চাঁপাইনবাবগঞ্জে আমের বাজার বসেনি। সেক্ষেত্রে এসব বিক্রি করতে পারছি না। এজন্য স্থানীয়ভাবে এসব আম বিক্রি করতে হচ্ছে তিন টাকা কেজি দরে। কয়েকদিন পরেই এসব আম বিক্রি হত ১০০-১৫০ টাকা কেজি দরে।
আরও পড়ুন: বাহারি মধুফলে ভরপুর বাজার, দাম কেমন?
আমচাষি ফেরদৌস সিহানুক শান্ত বলেন, ঝড় বৃষ্টিতে ঝরে যাওয়া আম কেউ কিনে নিতে চায় না। তাই স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মাত্র তিন টাকা কেজি দরে এসব আম কিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাচ্ছেন। আমরা গতকালকের ঝড়ে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি।
রহনপুরের কৃষক শফিকুল ইসলাম বলেন, এক সপ্তাহ পরই বাজারে এসব আম পেড়ে বিক্রি করতাম। কিন্তু গতকালকের ঝড়ে অর্ধেকের বেশি আম পড়ে গেছে। যে আমগুলো দেড়শ টাকা কেজি দরে বিক্রি হত। ঝড়ে পড়ে যাওয়ায় এসব আম এখন বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৩ তিন টাকা কেজি দরে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. মো. ইয়াছিন আলী বলেন, ঝড়বৃষ্টিতে কিছু আমের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গোমস্তাপুরে ক্ষতির পরিমাণ তুলনামূলক বেশি। এসব আম তেমন কোনো কাজে না আসায় কম দামে বিক্রি হয়। তবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবে না।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জে বর্তমানে ৩৭ হাজার ৬০৪ হেক্টর জমিতে আমের বাগান রয়েছে। এতে চলতি মৌসুমে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৬ হাজার মেট্রিক টন।
]]>