চাঁপাইনবাবগঞ্জে আম বাজারজাতে থাকছে না ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার, সভায় সিদ্ধান্ত

১৯ ঘন্টা আগে
ভৌগোলিক অবস্থান ও আবহাওয়ার কারণেই দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় সবশেষে আম পাঁকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জে। চলতি মৌসুমে জেলার গোলাপভোগ, ক্ষীরশাপাত ও ল্যাংড়াসহ সুমিষ্ট আম বাজারে আসতে আরও দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে। তাই ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার বা আম পাড়ার সময়সীমা নির্ধারণের বিষয়ে আমচাষি, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, বিজ্ঞানী ও কৃষি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন।

বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিকেলে কালেক্টরেট চত্বরে অনুষ্ঠিত সভায় আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের দাবির পর কৃষি কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীদের মতামতের ভিত্তিতে গত দুই বছরের ন্যায় চলতি মৌসুমে আম ক্যালেন্ডার বা আম পাড়ার সময়সীমা না রাখার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা প্রশাসন। এতে গাছে আম পরিপক্ব হলেই তা নামিয়ে বাজারজাত করতে পারবেন চাষিরা। তবে অপরিপক্ব আম বাজারজাত করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দেন জেলা প্রশাসক।


ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার প্রণয়ন, নিরাপদ ও বিষমুক্ত আম উৎপাদন, বিপণন, পরিবহন ও বাজারজাতকরণ সংক্রান্ত মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ বলেন, ‘গত দুই বছর জেলায় কোনো আম ক্যালেন্ডার বা আম পাড়ার সময়সীমা ছিল না। এই সময়ের মধ্যে প্রশাসনের তৎপরতা ছিল ব্যাপক। কিন্তু কোনো অসংগতি, অনিয়ম লক্ষ্য করা যায়নি। অন্যদিকে, জেলার আমচাষি, ব্যবসায়ী, আম গবেষক ও কৃষি কর্মকর্তারা ক্যালেন্ডার না করার দাবি জানায়। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমেও কোনো ক্যালেন্ডার না করার সীমান্ত নেয়া হয়েছে।’


তিনি আরও বলেন, ‘উপজেলা পর্যায়ে কৃষি বিভাগ, প্রশাসন ও পুলিশের কঠোর নজরদারি ও বাজার মনিটরিং থাকবে। পাশাপাশি সঠিক ওজনে আম বিক্রি ও পরিবহনে যেন কোনো সংকট বা সমস্যা না থাকে সে বিষয়েও কঠোর নজরদারি থাকবে।’


আম পাড়ার সময়সীমা বেঁধে না দেয়ায় খুশি জেলার আমচাষিরা। তারা জানান, বাজারে সবার শেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম আসায় প্রয়োজনীয়তা নেই আম ক্যালেন্ডারের।


আরও পড়ুন: চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৪৪ জেলার ৩৫০ চাষি-ব্যবসায়ীর আম সম্মেলন


শিবগঞ্জ ম্যাঙ্গো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খান শামীম বলেন, ‘সারাদেশের মধ্যে শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জেই একমাত্র পাকা আমের বাজার রয়েছে। তাই এখানকার কৃষকরা গাছে পাকা আম পেড়ে বাজারজাত করে, যাতে অতিরিক্ত অর্থ পাওয়া যায়। তাই এই ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডারের প্রয়োজন নেই।’


পাশাপাশি চাঁপাইনবাবগঞ্জের আম যেহেতু দেরিতে বাজারে আসে, তাই আগাম আম পাড়ায় প্রয়োজন নেই এখানকার আমচাষিদের।


মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক আব্দুস সামাদের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আফাজ উদ্দীন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. মো. ইয়াছিন আলী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম সাহিদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. ইকতেখারুল ইসলাম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মুনজের আলম মানিকসহ আমচাষি, ব্যবসায়ী, উদ্যোক্তা, পরিবহন মালিক ও রেওলয়ে কর্মকর্তাসহ অন্যান্যরা।


প্রসঙ্গত, চলতি মৌসুমে জেলায় ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমিতে আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ৮৬ হাজার মেট্রিক টন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন