২০২০ সালে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালের জন্য ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫০ শয্যার একটি ৮ তলা ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ভবনের মূল নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ হলেও চারটি লিফট স্থাপনের কাজ চাঁদাবাজদের কারণে অনিশ্চয়তায় পড়ে গেছে। প্রায় তিন কোটি টাকা ব্যয়ে লিফট স্থাপনের এই কাজ বর্তমানে বন্ধ রয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, একের পর এক চাঁদাবাজ গ্রুপ এসে চাঁদা দাবি করছে। একটি গ্রুপ চাঁদা নিয়ে গেলে, কিছুদিন পরই হাজির হয় আরেকটি। চাঁদা না দিলে তারা মালামাল লুট করে নিয়ে যায় এবং প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে দেয়া একটি চিঠি সময় সংবাদের হাতে এসেছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সিনিয়র ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মামুন স্বাক্ষরিত চিঠিটির অনুলিপি জেলা প্রশাসক, সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক, সেনাবাহিনীর ক্যাম্প ইনচার্জ ও রাজবাড়ী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বরাবর পাঠানো হয়েছে ।
চিঠিতে বলা হয়, চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি দুপুর আড়াইটার দিকে লিফটের কাজ চলমান থাকা অবস্থায় ৮ থেকে ১০ জন অস্ত্রধারী লোক প্রকল্প সাইটে প্রবেশ করে চাঁদা দাবি করে। সেই সাথে মূল্যবান মালামাল নিয়ে যেতে চেষ্টা করে। একই সাথে চাঁদা দেওয়া না হলে প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে চলে যায়। আগামী দুই মাস কর্তৃপক্ষের কাছে নিরাপত্তা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘চাঁদাবাজদের’ বিরুদ্ধে মামলা করায় ডায়াগনস্টিক মালিককে পিটিয়ে আহত
কাজের সাইটে মজুদকৃত মালামাল ও লোকবলকে ডাকাত ও সস্ত্রাসীদের হাত থেকে নিরাপত্তার জন্য চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী আরেকটি চিঠি দিয়েছেন সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বরাবর। চিঠিটির অনুলিপি জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারসহ আরও কয়েকটি দফতরে দেওয়া হয়েছে।
চাঁদাবাজির বিষয়টি নিয়ে রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার মো. কামরুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালের নির্মাণকাজের ঠিকাদারের কাছে চাঁদাবাজির বিষয়টি উন্নয়ন সমন্বয় সভায় উঠেছে। পুলিশ বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে। এর মধ্যে হাসপাতালের নির্মাণ কাজের সাইটে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। রাজবাড়ীতে চাঁদাবাজদের কোনো ঠাই হবেনা বলেও হুঁশিয়ারি করেন তিনি।
রাজবাড়ী নাগরিক কমিটির সভাপতি জ্যোতি শঙ্কর ঝন্টু বলেন, হাসপাতাল হলো রাষ্ট্রের সবচেয়ে মানবিক প্রতিষ্ঠান। সেখানে চাঁদা দাবি রাষ্ট্রের জন্যই হুমকি। দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতার না করলে এর দায় সরকারের ওপরই বর্তাবে।