লেজিমান, পেশায় একজন পরিচ্ছন্নতা কর্মী। তার স্ত্রীও একটি সাধারণ জীবনে অভ্যস্ত। কিন্তু জীবনের অভাব-অনটন তাদের থামাতে পারেনি। হজ পালনের স্বপ্ন তাদের মনের ভিতরে এতটাই গভীরভাবে গাঁথা ছিল যে প্রতিদিনের আয়ে থেকেও সামান্য সামান্য করে টাকা জমাতে থাকেন। এই সঞ্চয়ের ফলই আজ তাঁদের হজের সৌভাগ্য এনে দেয়।
এই যাত্রাকে সহজ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলে ‘মক্কা রুট ইনিশিয়েটিভ’ নামের সৌদি সরকারের একটি বিশেষ প্রকল্প। ইন্দোনেশিয়া সহ কয়েকটি দেশের হাজিদের জন্য এই প্রকল্পে আগেই বায়োমেট্রিক নিবন্ধন, ইলেকট্রনিক ভিসা প্রক্রিয়া ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা নিজ নিজ দেশে সম্পন্ন করা যায়। ফলে সৌদি আরবে পৌঁছেই হাজিরা দেরি না করে সরাসরি পবিত্র কাজগুলো শুরু করতে পারেন।
লেজিমান সৌদি প্রেস এজেন্সিকে বলেন,
আমি আনন্দে অভিভূত। কখনো ভাবিনি নিজের চোখে কাবা শরিফ দেখতে পারব। আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করি এবং মক্কা রুট ইনিশিয়েটিভে জড়িত সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই, যারা এই যাত্রাকে এত সহজ করে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: আগে ঋণ পরিশোধ করবে নাকি কোরবানি করবে?
২০২৫ সালের হাজ ৪ জুন থেকে শুরু হয়ে ৯ জুন পর্যন্ত চলবে বলে আশা করা হচ্ছে (চাঁদ দেখার ওপর নির্ভরশীল)। ইসলামি চান্দ্র বর্ষপঞ্জিকা অনুযায়ী, এটি হবে জিলহজ্জ মাসের ৮ থেকে ১৩ তারিখ পর্যন্ত। এই সময় হাজীরা মিনা, আরাফা, মুজদালিফা ও জামারাতের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানসমূহে ধর্মীয় আচার পালন করবেন।
হজ ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের একটি, যা প্রত্যেক সামর্থ্যবান মুসলমানের জীবনে একবার পালন করা ফরজ। লেজিমান ও তাঁর স্ত্রীর এই দীর্ঘ যাত্রা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, বিশ্বাস, অধ্যবসায় আর ত্যাগ কখনো ব্যর্থ হয় না।
একজন সাধারণ কর্মী থেকেও যে কেউ আল্লাহর ঘর পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেন, যদি থাকে একটি সৎ হৃদয় আর অটুট ধৈর্য। এই গল্প কেবল একটি দম্পতির হজযাত্রা নয়, বরং তা আশার এক বাতিঘর, যা অগণিত মুসলিমের হৃদয়ে নতুন করে স্বপ্ন বোনার সাহস জোগাবে।
]]>