বুধবার (৪ জুন) ভোর সাড়ে ৪টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে কেউ হতাহত না হলেও মহাসড়কে অন্তত দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে এবং বিপুল ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঢাকার শাহবাগ থেকে ছেড়ে আসা একটি এলপি গ্যাস সিলিন্ডারবাহী ট্রাক ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের মধ্যপাড়ার বর্ডার বাজারের দিকে যাচ্ছিল। শহর বাইপাস সড়কের বিরাসার এলাকায় পৌঁছালে মহাসড়কের একটি বড় গর্তে পড়ে ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারায়। এ সময় গর্তে আটকে থাকা একটি প্রাইভেটকারের ওপর ট্রাকটি উল্টে পড়ে।
পরিস্থিতি দ্রুত খারাপের দিকে যায়। গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তি ট্রাক ও প্রাইভেটকারে আগুন ধরে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে ট্রাকে থাকা সিলিন্ডারগুলো একে একে বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হতে থাকে।
বিস্ফোরণের শব্দে আশপাশের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে। দুর্ঘটনার কারণে চট্টগ্রাম–সিলেট মহাসড়কে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। পরে বিকল্প হিসেবে শহরের ভেতর দিয়ে যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ও পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক নিউটন দাস বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রাইভেটকারের ইঞ্জিন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন ছড়িয়ে পড়ে ট্রাকেও। এতে ট্রাকে থাকা সব গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়।
তিনি আরও বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক কোটি টাকার বেশি হতে পারে।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে মাহিন্দ্রা ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ৪
স্থানীয় বাসিন্দা মো. আলামিন বলেন, ভোররাতে হঠাৎ বিকট শব্দে ঘুম ভেঙে যায়। বাইরে এসে দেখি একটার পর একটা সিলিন্ডার বিস্ফোরণ হচ্ছে। এই সড়কটি দীর্ঘদিন ধরেই ভাঙা। বৃষ্টির কারণে গর্তে পানি জমে থাকা অবস্থায় এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সিএনজি অটোরিকশাচালক মাহাবুব রহমান সাকিব বলেন, রাস্তাটার অবস্থা খুব খারাপ। এত বড় গর্তে পড়ে গাড়ি উল্টেছে। ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ হলে এই দুর্ঘটনা ঘটত না।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে যানচলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করে। কেউ হতাহত না হলেও মহাসড়কে ব্যাপক যানজট তৈরি হয়েছিল। পরবর্তীতে শহরের ভেতর দিয়ে ছোট যানবাহন চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়।
রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সকাল ৯টা পর্যন্ত উদ্ধারকাজ চলছিল। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা অবস্থান করছিলেন।