ঘুমের সময় ‘নাক ডাকা’ বন্ধের বিশেষ উপায়

৩ সপ্তাহ আগে
ঘুমের মধ্যে কমবেশি অনেকেই নাক ডাকেন। এই সমস্যার পেছনে লুকিয়ে রয়েছে নানা শারীরিক জটিলতা। তাছাড়া নাক ডাকার শব্দে আশপাশের মানুষের ঘুমের ব্যঘাত ঘটে। তাই এ সমস্যার দ্রুত সমাধান করা জরুরি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এই সময়ের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কলকাতার পিজি হাসপাতালের ইএনটি (নাক, কান, গলা) বিভাগের চিকিৎসক ও অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর ডা. অরিন্দম দাস নাক ডাকার কারণ জানিয়েছেন।

 

ডা. অরিন্দম দাসের ভাষ্যমতে, নাক ডাকা শব্দটাই ভুল। অধিকাংশ সময়ই এ আওয়াজ নাক থেকে হয় না। হয় গলা বা নাকের পেছনের অংশ থেকে। আসলে নাক থেকে বায়ু প্রবেশ করে শ্বাসনালী হয়ে ফুসফুসে পৌঁছায়। কোনো কারণে এই বায়ু চলাচলের পথে বাধা তৈরি হলে টার্বুলেন্ট এয়ার তৈরি হয়। তখন এই আওয়াজটা শোনা যায়। তাই নাক ডাকার সমস্যা নিয়ে আরও বেশি সচেতনতা জরুরি।

 

নাক ডাকার কারণ

 

ডা. অরিন্দম বলেন, কয়েকটি কারণে নাক ডাকার সমস্যা বেশি হতে দেখা যায়। এগুলো হলো-

১. ওবেসিটি বা ওজন বেশি হলে;

২. নাকের হাড় বাঁকা হলে;

৩. গলায় কোথাও মাংসপেশী স্ফীত হলে;

৪. জিহ্বার নিচের অংশ স্ফীত হয়েছে ইত্যাদি।

 

এই কারণগুলোর থেকেই মূলত শব্দ তৈরি হয়। তবে মনে রাখবেন, যেকোনো বয়সে এই রোগ হতে পারে।

 

নাক ডাকার সমাধানে বিশেষ টিপস

 

এক পাশ ফিরে ঘুমান: যারা তীব্র নাক ডাকেন তারা চিৎ হয়ে শুলে নাক ডাকার প্রবণতা আরও বেড়ে যায়। এক পাশ ফিরে শুয়ে থাকলে কিছুটা হলেও সমস্যা কমে। পাশ ফিরে শুয়ে থাকলে বাতাস চলাচলের পথটি খুলে যায়। তাই শব্দ কমে যায়।

 

উঁচু বালিশে ঘুমান: উঁচু বালিশে মাথা রাখলেও অনেক সময় নাক ডাকার সমস্যা কমে। চার ইঞ্চিমতো উঁচু বালিশ ব্যবহার করলে সুফল পাওয়া যেতে পারে।

 

বেশি করে পানি খান: শরীরে পানির ঘাটতি হলেও নাক ডাকার সমস্যা বাড়ে। তাই নিজেকে সবসময় হাইড্রেটেড রাখুন, উপকার পাবেন।

 

ধূমপান ছাড়ুন: ধূমপানের ফলে শ্বাসনালীতে জটিলতার সৃষ্টি হয়। স্ফীত হয়ে যেতে পারে কিছু কিছু নাসিকাপেশী। ধূমপান বন্ধ করতে পারলে অনেক ক্ষেত্রেই শ্বাস-প্রশ্বাসের বাধা দূর হয়, ফলে নাক ডাকার প্রবণতা কমে।

 

অতিরিক্ত ওজন কমান: অতিরিক্ত ওজন নাক ডাকার অন্যতম কারণ। ওজন যত বাড়বে, নাক ডাকার আশঙ্কাও তত বাড়বে। অতিরিক্ত ওজন ঝরিয়ে ফেললে এ সমস্যা থেকে মুক্তি মিলতে পারে।

 

 

আরও পড়ুন: রাতে খাওয়ার পর কখনোই যা করবেন না

 

কিছু ঘরোয়া উপায়

 

পুদিনা, দারুচিনি ও রসুন মেশানো পানিতে কুলকুচি: পুদিনা, দারুচিনি ও রসুন হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে প্রতিদিন একবার করে কুলকুচি করুন। ফল পাবেন।

 

অলিভ অয়েল: ঘুমানোর কিছুক্ষণ আগে মাত্র কয়েক দিন এক ফোঁটা করে অলিভ অয়েল নাকে দিন। দেখবেন নাক ডাকার সমস্যা কমছে। কারণ, এ ক্ষেত্রে অলিভ অয়েল নাকের ভেতরের অংশ পরিষ্কার করে দেয়।

 

ঘি: এ সমস্যা সমাধানে ঘি হতে পারে আপনার অন্যতম হাতিয়ার। এ ক্ষেত্রে ঘি সামান্য গরম করুন। সহনযোগ্য অবস্থায় এলে সামান্য ঘি দুই নাকে দিন। দেখবেন কিছুদিনের মধ্যেই ফল পাচ্ছেন।

 

হলুদ: হলুদ নাকের অন্দর পরিষ্কার করতে পারে। এ ক্ষেত্রে গরম দুধের সঙ্গে হলুদ মিশিয়ে খান। দেখবেন সমস্যা মিটছে।

 

আরও পড়ুন: রাতে ঘুমানোর ‘আদর্শ সময়’ না মানলেই বিপদ!

 

প্রসঙ্গত, বেশির ভাগ মানুষ এই সমস্যাকে প্রথমে পাত্তা দেন না। তবে পরে দেখা যায়, জটিলতা বেড়ে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়ার দিকে চলে যায়। এই রোগীদের ঘুমের মধ্যে শ্বাস আটকে যায়। তখন হার্ট রেট বেড়ে যেতে পারে। এমনকি ব্লাড প্রেশার অস্বাভাবিক হয়ে যায়। প্রতিদিন এমন হতে থাকলে একটা সময়ে হার্ট অ্যাটাক হওয়ার আশঙ্কাও থাকে রোগীর।

 

তাই বিশেষ টিপস আর ঘরোয়া উপায়ে নাক ডাকা সমস্যার সমাধান না মিললে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়ে সঠিক চিকিৎসা শুরু করুন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন