ঘাটাইল উপজেলায় বর্তমানে বিদ্যুৎ সংযোগ আছে ৪৭ হাজার ৪২১টিতে। এর মধ্যে প্রিপেইড মিটার ২৩ হাজার, ডিজিটাল মিটার ২৪ হাজার ৪২১টি এবং সেচ পাম্প ৯০৩টি। কিন্তু অভিযোগ, মিটার রিডিংয়ের সঙ্গে বিলের কোনো মিল নেই। কারও কারও ক্ষেত্রে গড়মিল দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার থেকে ১৬ হাজার ইউনিট পর্যন্ত।
সাম্প্রতিক সময়ে উপজেলার দিঘলকান্দি ইউনিয়নের আনার গ্রামে ১৫-১৬টি সেচ পাম্পে বকেয়া বিদ্যুৎ বিল আদায়ের নামে একের পর এক ভুয়া বিল পাঠিয়েছে বিদ্যুৎ অফিস। শূন্য ইউনিট দেখিয়েও গ্রাহকদের ১৮ হাজার থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত বিল ধরিয়ে দেয়া হয়েছে। বিল না দিলে মামলার ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছেন গ্রাহকরা।
এদিকে মিটার রিডারদের এই ভুতুড়ে বিল ও অনিয়ম বন্ধে বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে অভিযোগ দিয়েও প্রতিকার মিলছে না ভুক্তভোগী গ্রাহকদের। ভুক্তভোগী মোকছেদ আলী বলেন, ‘সেচ পাম্পের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেছি। তারপরেও ৩৯ হাজার ২৮১ টাকার বিদ্যুৎ বিলের কাগজ হাতে ধরিয়ে দিয়েছে এবং ৭দিনের মধ্যে বিল পরিশোধ করতে বলা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে বিল না দিলে মামলা দেবে বলে জানানো হয়েছে। বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন দুর্নীতি করতে এমন হয়রানিতে ফেলেছেন।’
আরও পড়ুন: জরিমানা ছাড়াই পরিশোধ করা যাবে বিদ্যুৎ বিল
দেলোয়ার হোসেন নামে আরেক গ্রাহক বলেন, ‘মিটার রিডিংয়ের কয়েক হাজার টাকা গড়মিল রয়েছে বিলের কাগজের সঙ্গে। বিল পরিশোধ করার পরেও উল্টো বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন অন্যায়ভাবে ভুয়া বিল এবং তারা যা ইচ্ছে তাই করছেন।’
ভুক্তভোগী সজীব বলেন, ‘বিদ্যুৎ বিলের কাগজের সঙ্গে মিটার রিডিংয়ের কোনো মিল নেই। এখনো বিদ্যুৎ অফিসের কাছে ১৬ হাজার ইউনিটের বেশি পাওনা রয়েছি। অথচ আমাকেও ভুয়া বিল ধরিয়ে দিয়েছেন। এর বিচার কোথায় দেব? বিদ্যুৎ অফিসে প্রতিকার চাইলে তারা বলে বিল পরিশোধ করতেই হবে, না হলে মামলা হবে।’
আরেক ভুক্তভোগী তোরাব আলী বলেন, ‘রিডিংম্যানরা কখনোই মিটার দেখে না। বসে বসে ইচ্ছেমতো ইউনিট বসিয়ে বিল করে। আমাদের মিটার ভেঙেও ফেলা হয়েছে। মিটার বাণিজ্যও চলছে। পুরো অফিস দুর্নীতি আর ঘুষের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এই ভুয়া বিল থেকে মুক্ত করা হোক।’
এ বিষয়ে ঘাটাইল বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বিষয়টি তার জানা আছে এবং জড়িতদের বিরুদ্ধে শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
]]>