রাঙ্গামাটির রাবার বাগান এলাকার চেয়ারম্যান ঘাটায় একটি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান নূরুন নাহার। দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া অটোরিকশার পাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে ছিল বাজার সদাইয়ের ব্যাগ, আর ঠিক কিছু দূরেই পড়ে ছিল তার নিথর দেহ।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা জানান, এ দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনজন। গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে পাঠানো হয় রাউজানের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক আরও তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন।
নূরুন নাহারের মৃত্যুর খবরে পুরো বেতবুনিয়া এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন স্বজন, প্রতিবেশী ও পরিচিতজনেরা। অথচ এই সকালেই তিনি ঘরে রেখে গিয়েছিলেন একটি ঘুমন্ত সন্তান। যার জানা নেই, তার মা আর কোনোদিন ফিরে আসবেন না।
নূরুন নাহারের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছেন তার স্বামী আ. রহিম। বেতবুনিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে তিনি বুক চাপড়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ঘুম থেকে উঠে এই দুধের বাচ্চাটাকে কী করে বুঝাবো, তার মা আর নেই! কে লালন পালন করবে আমার এই দুধের শিশুকে?
তিনি জানান, দুর্ঘটনার পর স্ত্রীর চেহারা এতটাই বিকৃত হয়ে গিয়েছিল যে তিনি তার কাপড় দেখে শনাক্ত করেছেন। স্ত্রীর অকালমৃত্যুতে তিনি ঘাতক চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
আরও পড়ুন: মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে পৃথক মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ২
শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। হাটহাজারী থেকে বেতবুনিয়া রুটে চলাচলকারী একটি অটোরিকশা যাত্রী নিয়ে চেইরী বাজার থেকে রাউজান যাচ্ছিল। পথে রাবার বাগানের চেয়ারম্যান ঘাটায় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
নিহত অন্য যাত্রীরা হলেন- রাউজানের কাজীপাড়ার বাসিন্দা মো. আবু তোরাব (৫০), সুলতারপুরে জয়নাল আবেদীন (৬০), হাটহাজারী পূর্ব আলমপুর মাহাবুবুর রহমান বাচ্চু (৫০)। অটোরিকশা চালক ইজাদুল(২৬), ও ডাবুয়ার মিনু মারমা (২৫)। তারা সবাই অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন।
কাপ্তাই সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহেদুল ইসলাম জানান, দুর্ঘটনার পর পিকআপ চালক পালিয়ে গেছে। তাকে আটকের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। দুর্ঘটনায় নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।