টাইমস অব ইসরাইল ও আরটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী মাসে পোল্যান্ডে আউশউইৎস মুক্তির ৮০তম বার্ষিকী উদ্যাপন হবে। এ অনুষ্ঠানে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর যোগ দেয়া কথা ছিল।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির নাৎসী বাহিনী পোল্যান্ড ও আশপাশের দেশগুলোর ইহুদিদের যেসব বন্দি শিবিরে অবরুদ্ধ করে রাখত, সেগুলোকে বলা হয় আউশউইৎস। পোল্যান্ডজুড়ে এমন কয়েকটি কিছু আউশউইৎস রয়েছে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ছয় বছরে পোল্যান্ডের আউশউইৎস গুলোতে থাকা প্রায় ১০ লাখ ১০ হাজার ইহুদিকে হত্যা করা হয়। নিহত এসব ইহুদিদের প্রায় সবাই পোল্যান্ড এবং সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের বাসিন্দা ছিলেন। পরে এসব আউশউইৎস মুক্ত করে দেয়া হয়। তারপর থেকে প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে আউশউইৎস মুক্তি উদ্যাপন করে পোল্যান্ড।
আরও পড়ুন: ইসরাইলে নতুন সরকার গঠনের দাবিতে বিক্ষোভ, চাপে নেতানিয়াহু
সম্প্রতি পোল্যান্ডের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী লাদিস্লা বার্তোসজেউস্কি স্থানীয় এক সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, আমরা ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর দফতরের কর্মকর্তাদের জানিয়েছি যে, যদি তিনি (নেতানিয়াহু) পোল্যান্ড সফরে আসেন আসেন, তাহলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিসি) পরোয়ানা অনুযায়ী রোম সংবিধিতে স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে পোল্যান্ড সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করবে; কারণ, আমরা আইসিসির নির্দেশনা মেনে চলার জন্য চুক্তিবদ্ধ।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই বার্তা দেয়ার পর ইসরাইলের সরকার আমাদের জানিয়েছে যে তিনি এবার পোল্যান্ডে আসছেন না।’
জেরুজালেম পোস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আউশউইৎস মুক্তির উৎসবে ইসরাইলের শিক্ষামন্ত্রী ইয়াভ কিশই একমাত্র সরকারি প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত থাকতে পারেন। কারণ প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হার্জগেরও অংশগ্রহণ ‘অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে’।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি সদস্য রাষ্ট্র ‘রোম স্ট্যাটিউট’ নামে চুক্তিতে স্বাক্ষর করলেও নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকরে বিভিন্ন দেশের প্রতিক্রিয়া ভিন্ন। হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান নেতানিয়াহুকে সফরের জন্য প্রকাশ্যে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তিনি আশ্বস্ত করে বলেছেন, যে হাঙ্গেরি আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর করবে না।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় সেনা উপস্থিতি বাড়ানোর ঘোষণা ইসরাইলের
স্পেন, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, আয়ারল্যান্ড, লিথুয়ানিয়া এবং স্লোভেনিয়ার মতো দেশগুলো আইসিসির নির্দেশ অনুসরণের ইচ্ছা প্রকাশ করেছে।
অন্যদিকে ফ্রান্স প্রথমে গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকরের কথা বললেও পরে নেতানিয়াহুর জন্য কূটনৈতিক সুরক্ষার কথা উল্লেখ করেছে।
প্রসঙ্গত, ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নির্মম সামরিক অভিযান পরিচালনার নির্দেশ এবং সেখানকার বাসিন্দাদের খাবার, পানি ও ওষুধ থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগে গত নভেম্বরে নেতানিয়াহু এবং ইসরাইলের সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োয়াভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
]]>