গ্রিস যাওয়ার পথে নিখোঁজ ৬ জেলার ১৭ যুবক, ৪ মাসেও নেই সন্ধান

২ সপ্তাহ আগে
দালালের খপ্পড়ে পড়ে গ্রিস যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়েছেন দেশের ছয় জেলার অন্তত ১৭ জন যুবক। মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলার এসব যুবক গত ২৬ মার্চ লিবিয়া হয়ে ইউরোপে প্রবেশের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। এরপর থেকেই তাদের আর কোনো খোঁজ মেলেনি। প্রায় চার মাস কেটে গেলেও সন্তানদের খবর না পেয়ে স্বজনরা দিশেহারা।

পরিবারের অভিযোগ, মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যদের প্রলোভনে পড়ে তারা প্রত্যেকে ৫ থেকে ১২ লাখ টাকা করে দিয়েছেন। দালালরা নৌপথে গ্রিস পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও বর্তমানে নিখোঁজদের কোনো অবস্থানই জানা যাচ্ছে না। মূল অভিযুক্ত হিসেবে উঠে এসেছে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দক্ষিণ বাঁশকান্দি গ্রামের উজ্জ্বল আকনের ছেলে রাজীব আকনের নাম।


রাজীব আকনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, রাজীব বর্তমানে লিবিয়ায় অবস্থান করছেন।

নিখোঁজদের মধ্যে রয়েছেন- মাদারীপুর সদরের আসাদ সরদার, রাকিব খান, হৃদয় বেপারী, রাকিব মুন্সি, রাব্বি কাজী। শরীয়তপুরের ছোটন বেপারী, সৈয়দ রোমান, আনোয়ার হাওলাদার, জাকির শেখ, মানিক ঢালী, নাহিদ। ফরিদপুরের সবুজ শেখ, টাঙ্গাইলের ইয়ামিন আহমেদ, নেত্রকোনার দ্বীন ইসলাম, সিরাজগঞ্জের মিলন মিয়া, কিশোরগঞ্জের (ভৈরব) তারেক রহমান ও রাশেদুল আলম।


মাদারীপুরে ছোটন বেপারীর পাঁচ বছরের কন্যা সুলতানা বাবাকে খুঁজতে মায়ের হাত ধরে ছবি নিয়ে ছুটছে এক দ্বারে থেকে আরেক দ্বারে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার বাবা কোথায়, আমি জানি না।


এদিকে টাঙ্গাইলের বাসাইল উপজেলার জাহাঙ্গীর মৃধা বলেন, 'এইচএসসি পাস করা ছেলেকে গ্রিস পাঠাতে নিজের চালানো সিএনজি বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা দালালকে দিয়েছিলাম। এখন ছেলে নাই, সংসারও নাই।'


আরও পড়ুন: গ্রিসে নৌকাডুবে ৫ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু, নিখোঁজ ৪০


নিখোঁজ হৃদয় বেপারীর মা কহিনুর বেগম বলেন, 'আমি আমার ছেলেকে ফেরত চাই। সরকার যেন গরিবের দিকে তাকায়।'


ফরিদপুরের সবুজ শেখের ভাই সুরুজ শেখ জানান, 'রাকিব আকন নামে এক দালালের হাত ধরে ভাইকে পাঠিয়েছিলাম। এখন চার মাস হয়ে গেলেও তার কোনো খবর নেই।'


নিখোঁজদের স্বজনরা শুক্রবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে সরকারের কাছে মানবপাচারকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও প্রিয়জনদের উদ্ধারের দাবি জানান।


এ বিষয়ে মাদারীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাঈমুল হাসান বলেন, 'এ ধরনের অভিযোগ আমাদের কানে এসেছে। যদি পরিবারগুলো থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়, তাহলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।'

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন