গেজেট থেকে নাম প্রত্যাহার চান জুলাই যোদ্ধা ইতু, আবেদনপত্রে যা লিখলেন

৩ সপ্তাহ আগে
ক্ষোভে জুলাইয়ের সরকারি গেজেট থেকে স্বেচ্ছায় নাম প্রত্যাহারের আবেদন করেছেন ফরিদপুরের ‘জুলাই যোদ্ধা’ আবরাব নাদিম ইতু। তার গেজেট নম্বর-২৪৮৯।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে ফরিদপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নাম প্রত্যাহারের এ আবেদন করেন তিনি। এসময় জেলা প্রশাসকের (ডিসি) পক্ষে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সোহরাব হোসেন আবেদনপত্রটি গ্রহণ করেন।

 

পরে আবরাব নাদিম ইতু ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার আমার বাবার ২ বছর পেনশনের টাকা আটকে রেখেছিল আর এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিভিন্ন দ্বারে ঘুরেও কোনো কাজই হলো না।’

 

জেলা প্রশাসকের বরাবর দেয়া ওই আবেদনপত্রে জুলাই যোদ্ধা আবরার নাদিম ইতু উল্লেখ করেন, 

জুলাইয়ের যৌক্তিক আন্দোলনে আহত হয়েছিলাম। কিন্তু দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং স্থানীয় সরকারগুলো জুলাইয়ের যে চেতনা দুর্নীতি ও লুটপাট মুক্ত দেশ গড়তে চেয়েছিল তা কোনভাবেই ১ বছরের অধিক সময় ধরে পারেনি এবং কার্যকর যে পদক্ষেপ তাও নিতে পারেনি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোও বিভিন্ন অসংগতিমূলক কর্মকাণ্ড লক্ষণীয় রয়েছে।

 

আরও পড়ুন: ১২৮ জুলাই যোদ্ধার গেজেট বাতিল

 

তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘বিশেষ করে ফরিদপুরে বিভিন্ন প্রশাসনিক ও বিভিন্ন সেক্টরে আগের মতোই বহাল রয়েছে অনিয়ম। একটি সিন্ডিকেটও ভাঙ্গেনি, সঙ্গে অনিয়মও থেমে নেই, যা আপনারা সবাই অবগত আছেন। তাই আমি আমার নাম সরকারি গেজেট থেকে প্রত্যাহার এবং মাসিক ভাতা (যদিও আমি নেইনি) আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করলাম।’

 

জানা যায়, আবরাব নাদিম ইতু জুলাই আন্দোলনের শুরু থেকে সক্রিয় ছিলেন। প্রথমদিকে তার নেতৃত্বে ফরিদপুরে পদযাত্রা, মিছিল শুরু হয়। ১৮ জুলাই শহরের ব্রহ্মসমাজ সড়কে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচিতে হামলা চালায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সদস্যরা। ওই সময় আবরাব নাদিম, কাজী নিশাদ নামে আরেক শিক্ষার্থীকে রক্তাক্তভাবে আহত করা হয়। এছাড়া ফরিদপুরের বিভিন্ন যৌক্তিক আন্দোলনে তার ভূমিকা অপরিহার্য।

 

আবরার নাদিম ইতু বলেন, 

আমরা যে জন্য আন্দোলন করেছিলাম তার কোনো প্রতিফলন দেখতে পারছি না। চারদিকে নিজেদের বন্দোবস্ত চলছে। আওয়ামী সরকার আমার বাবার ২ বছর পেনশনের টাকা আটকে রেখেছিল আর এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিভিন্ন দ্বারে ঘুরেও কোনো কাজই হলো না। এইটা জাস্ট বললাম আমার ব্যক্তিগত কথা কিন্তু দেশের অধিকাংশ সেক্টরের একই অবস্থায় রয়েছে। কোনো অবস্থার পরিবর্তন হয়নি। তাই এসব সরকারি গেজেট থেকে নাম প্রত্যাহার করলাম এবং মাসিক ভাতাসহ (যদিও নেই না) সব সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাহার করলাম।

 

আরও পড়ুন: জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে দাঁড়িয়ে জুলাই যোদ্ধাদের কটূক্তি করে ভিডিও পোস্ট, তরুণী গ্রেফতার

 

আবেদনপত্রটি গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করে ফরিদপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সোহরাব হোসেন বলেন, ‘স্বেচ্ছায় জুলাইয়ের সরকারি গেজেট থেকে এবং সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে নাম প্রত্যাহারের আবেদনটি আমরা হাতে পেয়েছি। আমরা এটা পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়ার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেব।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন