গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে অনীহা কেন?

২ সপ্তাহ আগে
তিন বছর না যেতেই গুচ্ছ ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে সরে এসেছে খোদ নেতৃত্ব দেয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলোই। গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েও শিক্ষার্থী না পাওয়া, বারবার ফি আদায় ও নির্দিষ্ট সময়ে ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করতে না পারাই কারণ বলছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রক্রিয়া গ্রহণযোগ্য করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছে আহ্বায়ক কমিটি। আর শিক্ষার্থীদের সুবিধা মাথায় রেখে প্রক্রিয়া ঠিক করার পরামর্শ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি)।

শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ ও খরচ কমাতে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে প্রথমবার সাধারণ ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। সবশেষ ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয় এ প্রক্রিয়ায় অংশ নেয়।

 

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা শুরুর পর যে কয়টি বিশ্ববিদ্যালয় নেতৃত্ব দিয়েছে তার মধ্যে একটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। তবে নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক কাউন্সিলেও গুচ্ছ থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্র পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।  

 

শুধু জগন্নাথ নয়, কুমিল্লা, খুলনা ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও এরইমধ্যে নিজস্ব পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার আয়োজন শুরু করেছে।

 

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গুচ্ছ প্রক্রিয়ায় আট থেকে দশবার গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েও ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে খালি ছিল- ২০০ আসন। ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষে ৬৫০ এবং ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ৯৫০টি আসন খালি ছিল। কাঙ্ক্ষিত মানের শিক্ষার্থী না পাওয়া ও ভর্তি প্রক্রিয়ায় দীর্ঘসূত্রিতার কারণেই এ সিদ্ধান্ত।

 

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন বলেন, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী প্রথমে ১৫০০ টাকায় আবেদন করে। চারটি বিশ্ববিদ্যালয় পছন্দ করলে সেখানে আরও ৫০০ টাকা করে দিতে হয়। এখানেই তো আবেদনকারীর সাড়ে ৩ হাজার টাকা শেষ। ভর্তির সময় ১০-১২ হাজার টাকা দিতে হয়। এরপর মাইগ্রেশনও একটা সমস্যা। বিভিন্ন সমস্যায় ভুগতে হয়।

 

আরও পড়ুন: গুচ্ছ থেকে বের হতে ৪৮ঘণ্টার আলটিমেটাম শাবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের

 

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় উপ-উপাচার্য হারুন অর রশিদ খান বলেন,

আমাদের এখানে একাডেমিক সেশন শুরু হয় জানুয়ারি মাসে। গুচ্ছ থাকার কারণে শিক্ষার্থী পাওয়া যায় জুলাই কিংবা আগস্ট মাসে। এ বছর পরীক্ষা শুরুর তিন-চার দিন আগেও শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়েছে।      

 

চলতি শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছে থাকলেও সমস্যা সমাধান না হলে প্রক্রিয়া থেকে সরে যাওয়ার আল্টিমেটাম দিয়েছে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়। কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রক্রিয়া ফলপ্রসূ করার চেষ্টা চলছে।

 

গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কমিটির আহ্বায়ক ও  মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ বলেন, সিস্টেমেরে যদি কিছু ত্রুটি থেকে থাকলে সেগুলো আমরা ক্রমান্বয়ে সমাধান করতে পারি। আরও আধুনিকায়ন করা যেতে পারে।  

 

শিক্ষার্থীদের সুবিধা গুরুত্ব দিয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া ঠিক করতে আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এসএমএ ফায়েজ। তিনি বলেন, গুচ্ছের পক্ষে যেমন বক্তব্য রয়েছে, তেমনি গুচ্ছের বিপরীতেও বক্তব্য রয়েছে। দিনশেষে স্টুডেন্ট কমিউনিটি যেটা চাইবে, সেভাবেই ভর্তি পরীক্ষার আয়োজন করা উচিত।

 

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে গুচ্ছ প্রক্রিয়া থেকে বের না হতে চিঠি পাঠিয়ে অনুরোধ করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন