গাড়ি আমদানি বাড়লেও বিক্রি বেড়েছে কতটা?

২ দিন আগে
ডলার সংকট কাটিয়ে এলসি খোলার জটিলতা কমার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ি আমদানি বেড়েছে। তাছাড়া রাজনৈতিক কর্মসূচি ও আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে চলছে গাড়ি কেনার হিড়িকও। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে শুধু চট্টগ্রাম বন্দরেই খালাস হওয়া সাড়ে তিন হাজার গাড়ি বিক্রির জন্য শো রুমে চলে গেছে। তবে খরচ কমানোর কমাতে মূল্যবান ব্র্যান্ডের গাড়ির পরিবর্তে শতভাগ রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি করা হচ্ছে।

চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজের তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চার মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে ৯টি বিশেষায়িত জাহাজে মোট ৩ হাজার ৫০৪টি গাড়ি খালাস করা হয়েছে। এই খাত থেকে রাজস্ব আয় হয়েছে ৮৭০ কোটি টাকা। অথচ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে একই সময়ে গাড়ি আমদানি হয়েছিল ৩ হাজার ১২৫টি। ফলে গাড়ি আমদানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজস্বও ৬০ কোটি টাকা বেড়েছে।

 

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজের সহকারী কমিশনার ফয়সাল আহমেদ জানান, গত অর্থবছরের তুলনায় এবার প্রায় ৪০০ গাড়ি বেশি আমদানি হয়েছে, যার কারণে রাজস্বের পরিমাণও বেড়েছে।

 

আগে আমদানি করা গাড়ি বিক্রির জন্য চট্টগ্রাম বন্দরকে অলিখিত শো রুম হিসেবে ব্যবহার করা হতো, কিন্তু হঠাৎ বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় সেই প্রবণতা অনেকটা কমেছে। বন্দরের ১ হাজার ২৫০ গাড়ি রাখার ধারণক্ষমতার দুইটি শেডে বর্তমানে গাড়ি আছে মাত্র ৮৬৭টি। এর মধ্যে খালাস প্রক্রিয়ায় থাকা ৭৬৭টি গাড়ি এক মাসেরও কম সময়ে আমদানি করা হয়েছে।

 

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, বন্দরে প্রায় ৮৬৭টি গাড়ি আছে। এর মধ্যে ১০০টি গাড়ি আসার সময় ৩০ দিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। আর প্রায় ৬০০টির বেশি গাড়ি অনপ্রসেস ডেলিভারির অবস্থায় রয়েছে, কারণ সেগুলো এখনও ৩০ দিন পূর্ণ হয়নি।

 

আরও পড়ুন: বয়সসীমা বাড়ালে কি কম দামে গাড়ি কেনার সুযোগ পাবেন ক্রেতারা?

 

এদিকে, আন্তর্জাতিক বাজারে গাড়ির দাম তুলনামূলক কম হলেও বাংলাদেশে আমদানি করা গাড়ির ওপর ৮০০ থেকে ৮৫০ শতাংশ শুল্কারোপ করা হয়। তবে ডলার সংকট কেটে যাওয়ায় এবং এলসি খোলার জটিলতা এড়াতে পারায় গাড়ি আমদানি বেড়েছে। এছাড়া দীর্ঘদিন স্থবির রাজনৈতিক অঙ্গন সচল হওয়া ও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে দেশে গাড়ি বেচাকেনা বাড়ছে।

 

মূলত কয়েক বছর আগেও রেঞ্জ রোভার-মার্সিডিজ বেঞ্চ-জাগুয়ার-হেরিয়ারের মতো বিখ্যাত ব্র্যান্ডের মূল্যবান গাড়ি আমদানি হলেও এখন পরিস্থিতি পাল্টে গেছে। বিশেষ করে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে ব্যবহারের জন্য কমদামের রিকন্ডিশন্ড গাড়ি আমদানি হচ্ছে পুরোদমে।

 

তবে বন্দর ও কাস্টমসের তথ্য নিয়ে গাড়ি ব্যবসায়ীদের কিছুটা দ্বিমত রয়েছে। বারভিডার সাবেক সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান বলেন, গাড়ির আমদানি কিছুটা বেড়েছে, কিন্তু তা মূলত নির্বাচনকে সামনে রেখে। দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ফিরলে বেচাকেনা বাড়তে পারে, তবে বর্তমানে তা আশানুরূপ নয়।

 

ঢাকার কারিব অটো লিমিটেডের মালিক কাওসার হামিদ বলেন, বন্দরে গাড়ি খালাস বেড়েছে, তবে তার মানে এই নয় যে গাড়ি বিক্রি বেশি হচ্ছে। আসল বিষয় হলো, দেশে গাড়ির বেচাকেনা এখনও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়েনি।

 

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দরে বছরে ১৫ থেকে ২০ হাজার গাড়ি খালাস হয়।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন