শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এর আগে গত ২২ সেপ্টেম্বর টঙ্গীর সাহারা মার্কেটে কেমিক্যাল কারখানায় আগুন নেভাতে গিয়ে তিনি দগ্ধ হন। তার শরীরের ৪২ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।
এই ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের চারজন আহত হয়েছিলেন। দগ্ধ হয়েছিলেন বেশ কয়েকজন। তাদের মধ্যে তিনজন ফায়ার ফাইটার মৃত্যুবরণ করলেন।
এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ফায়ার ফাইটার শামীম আহমেদ ও ২৪ সেপ্টেম্বর ফায়ার ফাইটার নুরুল হুদা মারা যান। সবশেষ মারা গেলেন ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর জান্নাতুল নাঈম। এছাড়া কেমিক্যাল গোডাউনে বিস্ফোরণে দগ্ধ দোকান কর্মচারী আল আমিন হোসেন বাবু (২২) শুক্রবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
খন্দকার জান্নাতুল নাঈম ১৯৮৮ সালের ২৪ আগস্ট শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার গড়দুয়ারা ইউনিয়নের খন্দকার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মোল্লার টেক উদয়ন বিদ্যালয় থেকে ২০০৪ সালে এসএসসি ও ফুলপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। পরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
আরও পড়ুন: টঙ্গী ট্রাজেডি: মারা গেলেন দগ্ধ দোকান কর্মচারী আল আমিন
২০১৬ সালের ২৪ আগস্ট বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে যোগ দেন নাঈম। কর্মজীবনে তিনি স্টেশন অফিসার হিসেবে মানিকগঞ্জ ও নারায়ণগঞ্জ ফায়ার স্টেশনে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে পদোন্নতি পেয়ে ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর হিসেবে চট্টগ্রাম ও সর্বশেষ টঙ্গী ফায়ার স্টেশনে কর্মরত ছিলেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত ছিলেন এবং এক সন্তানের জনক। তার পিতা খন্দকার মোজাম্মেল হক ও মাতা দেলোয়ারা বেগম।
উল্লেখ্য, গত ২২ সেপ্টেম্বর টঙ্গী সাহারা মার্কেটের পাশে ওই কেমিক্যাল গোডাউনে আগুন লাগে। আগুন নেভাতে টঙ্গী ফায়ার স্টেশনের ৭টি ইউনিট কাজ শুরু করে। অগ্নিনির্বাপণের সময় হঠাৎ বিকট বিস্ফোরণ ঘটলে চার ফায়ার ফাইটার এবং আল আমিনসহ স্থানীয় কয়েকজন দোকান কর্মচারী দগ্ধ হন। দ্রুতই তাদের বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
অগ্নিকাণ্ডসহ ঝুঁকিপূর্ণ ঘটনায় সর্বদা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে এ পর্যন্ত ৫১ জন সদস্য প্রাণ উৎসর্গ করেছেন। সর্বশেষ সেই আত্মত্যাগের মিছিলে যোগ হলো খন্দকার জান্নাতুল নাঈমের নাম।
]]>