গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের বিক্ষোভ

১ সপ্তাহে আগে
গাজায় ইসরাইলের গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

সোমবার (৭ এপ্রিল) ঢাকার বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে তারা এই বিশাল বিক্ষোভ মিছিল করেছে।


মিছিলের আগে এক সমাবেশে বক্তারা মুসলিম জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।


ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সিনিয়র সহ-সভাপতি মাওলানা গাজী আতাউর রহমানের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, ইসলামী আন্দোলনের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মদ ইমতিয়াজ আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমাদ আবদুল কাইয়ুম, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুফতী রেজাউল করীম আবরার, বিশিষ্ট দাঈ মুফতী আবু ত্বহা আদনান, মুফতী শামসুদ্দোহা আশরাফী, ইসমাঈল হোসেন সিরাজী, মাওলানা শাহজাহান আল হাবিবী, মুফতী আব্দুল আজিজ কাসেমী, মুফতী এমদাদুল্লাহ ফাহাদ, মুফতী ফরিদুল ইসলাম, মাওলানা কেএম শরীয়াতুল্লাহ।


বাদ জোহর মিছিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও বিক্ষুব্ধ জনতা বেলা ১১টায় বায়তুল মোকাররম উত্তর গেটে জমায়েত হতে থাকেন। সকলের হাতে প্যালেস্টাইনের পতাকা, কালেমার পতাকা, আল আকসার ছবি শোভা পাচ্ছিল। ইসরায়েলের নেতানিয়াহু ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছবির ওপর জনতার রুদ্ররোষ সৃষ্টি হলে ছবিতে জুতাপেটা ও আগুন ধরিয়ে প্রতিবাদ করে।


আরও পড়ুন: ‘গ্লোবাল স্ট্রাইক ফর গাজা’ কর্মসূচি পালনে ছাত্রশিবিরের আহ্বান


সমাবেশ থেকে মজলুম গাজাবাসীর আহুত হরতালের সমর্থনে একটি বিশাল মিছিল বের হয়ে বায়তুল মোকাররম পল্টন, প্রেসক্লাব, শাহবাগ, টিএসসি হয়ে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে গিয়ে মিছিলটি শেষ হয়।


সভাপতির বক্তব্যে জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের সহ-সভাপতি মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেন, ‘গাজায় ইজরাইলের নৃশংসতা এবং বর্বরতা ইতিহাসের সকল নৃশংসতাকে হার মানিয়েছে। ইসরাইল কতটা বর্বর, হিংস্র হায়েনা তা তাদের কর্মকাণ্ডে ফুটে উঠেছে। ইসরাইলের গণহত্যা সকল মানবিক বির্পযয়কে ছাড়িয়েছে। এভাবে বোমাবর্ষণ করে মানুষ হত্যার নজীর মানব ইতিহাসে আর নাই। তার চেয়েও লজ্জাজনক বিষয় হলো, মানবতার ধ্বজাধারী পশ্চিমা সরকারগুলো, বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানগুলো এবং আরব সরকারগুলো যে নিরব ভূমিকা পালন করছে তা ইতিহাসের কলঙ্ক হয়ে থাকবে। মধ্যপ্রাচ্য থেকে জারজ রাষ্ট্র ইসরাইলকে নিশ্চিহ্ন না করা পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহর প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ। 


তিনি বলেন, ফিলিস্তিনে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরাইল যে ধ্বংস ও হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে তা ইতিহাসের জঘন্যতম মানবাধিকার লঙ্ঘন। এ পরিস্থিতিতে জাতিসংঘ, ওআইসি, আরবলীগসহ মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোর ভূমিকায় আমরা হতাশ।


আরও পড়ুন: গাজায় গণহত্যা নিয়ে যে প্রশ্ন রাখলেন জয়া


আতাউর রহমান বলেন, এবার যুদ্ধ বিরতি নয়, বরং ফিলিস্তিনকে স্বাধীন দেশ ঘোষণা করে ইসরাইলকে মধ্যপ্রাচ্য থেকে বের করে দিতে হবে।


তিনি বলেন, ইসরাইল এখনই বিরত না হলে মুসলিম বিশ্ব মার্চ টু ফিলিস্তিনের মাধ্যমে ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে বাধ্য হবে। এছাড়াও তিনি ফিলিস্তিন রক্ষায় বৈশ্বিক চাপ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্রসমূহের প্রতি আহ্বান জানান। বাংলাদেশের পাসপোর্টে একসেপ্ট ইসরাইল সংযোজনের আহ্বান জানানো হয়।


মুফতি রেজাউল করীম আবরার বলেন, ইঙ্গ-মার্কিন ও ইসরাইলি সকল পণ্য বর্জনের মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে চাপ অব্যাহত রাখতে হবে। পাড়ায় মহল্লায় ইসরাইলি পণ্যের বিরুদ্ধে প্রচারণা অব্যাহত রাখতে হবে। 


তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টাকে ইসরাইলের ভয়াবহ নৃশংসতার বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী জোরালো প্রতিবাদ গড়ে তুলতে হবে এবং ইসরাইলের পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। ইসরাইলকে মুক্ত করতে ভূমিকা পালন করতে হবে। সেইসঙ্গে বাংলাদেশের শান্তিমিশনের মতো প্যালেস্টাইনে যাওয়ার ব্যবস্থা করলে বাংলাদেশ থেকে লাখো যুবক প্যালেস্টাইনের মজলুমদের পক্ষে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে।’


গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে বাংলাদেশের সকল জেলা ও উপজেলা শাখা বিশ্বব্যাপী মজলুম গাজাবাসীর আহুত হরতালে রাস্তায় নেমে আসে। অনেক মা-বোন তাদের কোলের বাচ্চাদের নিয়ে প্রতিবাদে অংশ নেন। তারা এই বর্বরতার অবসান চান। যুদ্ধ চাই না শান্তি চাই।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন