ক্রিকেটারদের অর্থ না দেয়ার পাশাপাশি দেশ ছাড়তে বাধ্য করার মতো অভিযোগও উঠেছিল ওমান ক্রিকেট বোর্ডের বিরুদ্ধে। তবে এই বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানায়নি বোর্ড। উল্টো টুর্নামেন্টের আগে খেলতে না চাওয়ার হুমকি দেয়াকে দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ হিসেবে উল্লেখ করেছে বোর্ডটি।
বিশ্বকাপের প্রাইজমানি দিতে দেরি হওয়ার কারণ হিসেবে প্রক্রিয়াকে দায়ী করেছে ওমান ক্রিকেট। আগামী জুলাইয়ের মধ্যে ক্রিকেটারদের পাওনা অর্থ বুঝিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তারা। আজ (২৩ জুন) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব জানিয়েছে বোর্ড।
২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টটির ইতিহাসের রেকর্ড প্রাইজমানি দেয়া হয়েছে। আইসিসির দেয়া তথ্যানুযায়ী, টুর্নামেন্টের মোট পুরস্কারের অর্থ ছিল ১১.২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে ওমানের প্রাপ্য ছিল সোয়া দুই লাখ মার্কিন ডলার। নিয়মানুযায়ী, টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার ২১ দিনের মধ্যে খেলোয়াড়দের পুরস্কারের অর্থ দিতে বাধ্য বোর্ডগুলো। তবে ওমানের ক্রিকেটাররা এখনও সেই অর্থ পায়নি।
ওমান ক্রিকেটাররা জানিয়েছে, তারা কখনও জানতেনই না বিশ্বকাপ থেকে পাওয়া অর্থ খেলোয়াড়রা পায়। ২০২১ বিশ্বকাপের অর্থও তারা পাননি। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের তিন মাস পর সেপ্টেম্বরে কানাডায় একটি ত্রিদেশীয় সিরিজ (কানাডা ও নেপালের বিপক্ষে) খেলতে গিয়ে তারা প্রথম এই বিষয়ে জানতে পারে।
অক্টোবরে ওমানে অনুষ্ঠিত ইমার্জিং এশিয়া কাপের আগে খেলোয়াড়রা এটি নিয়ে কঠোর পদক্ষেপ নেন। তারা বোর্ডকে আল্টিমেটাম দেন যে টাকা না পেলে খেলবেন না। তবে খেলোয়াড়দের কড়া সিদ্ধান্তে নরম না হয়ে আরও কঠোর সিদ্ধান্ত নেয় ওমানের বোর্ড। তারা সিনিয়র ক্রিকেটারদের জানায়, হয় খেলো, নয়তো বোর্ড কাছে আরও ১৫ জন খেলোয়াড় প্রস্তুত রয়েছে। খেলোয়াড়রা অস্বীকার করলে তাদের হোটেল থেকে বের হয়ে যেতে বলা হয়। ফলে রাতারাতি বদলে যায় ওমানের ইমার্জিং এশিয়া কাপের দল।
ইমার্জিং এশিয়া কাপে ওমানের দল পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ঘোষিত ১৫ জনের মাত্র পাঁচ জন খেলেছিলেন। আগের ম্যাচের একাদশ থেকে মাত্র ৪ জন এবং টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল থেকে মাত্র দুজন ছিলেন এই ম্যাচে।
আরও পড়ুন: অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফির নামকরণ নিয়ে ক্ষুব্ধ গাভাস্কার
শুধু দল থেকেই যে বাদ পড়েছেন ক্রিকেটাররা এমন নয়। এই ঘটনার পর অনেক ক্রিকেটারদের ওমান ছাড়তেও বাধ্য করা হয়। অনেক ক্রিকেটারের ভিসা ও চাকরি বাতিল করা হয়, যার ফলে তারা দেশ ছাড়তে বাধ্য হন।
তবে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য এখনও খেলোয়াড়দের দোষারোপ করেন ওমান ক্রিকেটের প্রধান পাঙ্কাজ খিমজি। তিনি বলেন, 'খেলোয়াড়দের বিষয়টি সম্পর্কে পরিষ্কার হওয়ার পুরো অধিকার ছিল এবং আমরা সংশ্লিষ্ট সময়সীমা সম্পর্কে স্বচ্ছ ছিলাম।'
'কিন্তু শেষ মুহূর্তে সরে দাঁড়ানো-দেশের প্রতিনিধিত্ব করার কয়েক ঘণ্টা আগে-এটা কেবল দায়িত্বজ্ঞানহীনতাই ছিল না, পুরো দলের, কোচিং স্টাফের, বোর্ডের এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সেই দেশের জন্য অবমাননাকর ছিল, যাদের প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছিল তারা,' তিনি যোগ করেন।
]]>