গণভোট করতে গেলে পরিকল্পনা-প্রস্তুতিতে পরিবর্তন আসতে পারে: ইসি

২ সপ্তাহ আগে
জুলাই সনদ অনুযায়ী গণভোট করতে গেলে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতিতে পরিবর্তন আসতে পারে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এদিন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং প্রাসঙ্গিক বিষয়ে মতবিনিময় ও প্রাক প্রস্তুতিমূলক সভায় নিরাপত্তা ঝুঁকি বিবেচনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন, জুলাই সনদ অনুযায়ী গণভোটের বিষয়ে প্রস্তুতি গ্রহণসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের বদলির বিষয়ে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

 

রোববার (৯ নভেম্বর) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন।

 

সভায় স্বাগত বক্তব্যে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ শুরু করেছে। এরই অংশ হিসেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত বাহিনী প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।

 

আরও পড়ুন: নির্বাচনী এলাকার ঝুঁকি /রেড, ইয়েলো ও গ্রিন জোনে নামবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী

 

তিনি বলেন,

 আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্বকে মূলত তিনটি পর্যায়ে ভাগ করা যায়, যথা-তফসিল ঘোষণার পূর্বে, তফসিল ঘোষণা হতে নির্বাচনী গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত এবং নির্বাচন পরবর্তী কার্যক্রম। শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনে আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত বাহিনী প্রধান ও দায়িত্বপ্রাপ্তদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী প্রধানদের সুপারিশ/মতামত পরিকল্পনা প্রণয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে

 

সভায় ২২টি বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়-

 

১. ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং প্রাসঙ্গিক বিষয়ে মতামত, সুপারিশ ও প্রস্তাবসমূহ লিখিতভাবে কমিশনকে প্রদান করতে হবে।

২. নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে বাহিনীগুলোকে নিরাপত্তা পরিকল্পনা যথা সময়ে প্রেরণ করতে হবে।

আরও পড়ুন: ভোটের দায়িত্বে নিয়োজিতদের ওপর নির্ভর করছে বাংলাদেশের গতিপথ: সিইসি 

৩. থ্রেট অ্যাসেসমেন্ট করে ডেপ্লয়মেন্ট প্ল্যান করতে হবে। রেড, ইয়েলো ও গ্রিন জোনে বিভক্ত করে পরিকল্পনা করতে হবে।

৪. জুলাই সনদ অনুযায়ী গণভোট করতে গেলে পরিকল্পনা ও প্রস্তুতিতে পরিবর্তন আসতে পারে। বিষয়টি সমন্বয় করার জন্য মানসিক প্রস্তুতি রাখতে হবে।

৫. গোয়েন্দা তথ্যসহ নির্বাচন সংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য নিয়মিত সংগ্রহ করতে হবে এবং প্রাপ্ত তথ্য কমিশনকে নিয়মিতভাবে অবগত করতে হবে। প্রয়োজনে বাহিনীগুলোর মধ্যেও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় করা যাবে।

৬. নির্বাচন পূর্ব সময়ে কিছু অস্বাভাবিক পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে, এজন্য বাহিনীগুলোকে আগাম সর্তকতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

৭. যেকোনো অপতৎপরতারোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

আরও পড়ুন: ‌‘নিয়মের বাইরে কিছু করার সুযোগ নেই’, তারেকের অনশন প্রসঙ্গে ইসি সচিব

৮. নির্বাচনে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার সুবিধার্থে সকলকে এখন থেকেই কাজ করতে হবে।

৯. যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে যে বাহিনী ঘটনাস্থলের কাছে থাকবেন, তাকেই সর্বপ্রথম রেসপন্স করতে হবে।

১০. সক্ষমতা ও উন্নয়ন, প্রযুক্তির ব্যবহার, কন্টিনজেন্সি ম্যানেজমেন্ট, সামাজিক মাধ্যম ও নির্বাচনে এআইয়ের ব্যবহার ইত্যাদির বিষয়ে আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

১১. নারীদের প্রতি সাইবার বুলিং প্রতিরোধ, সংখ্যালঘু ইত্যাদি ইস্যুর মোকাবিলায় আগাম প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে।

১২. মানুষের ভয়েস ক্লোন করে বা চরিত্র হননের ঘটনা ঘটতে পারে, এটি মোকাবিলায় প্রস্তুতি নিতে হবে।

১৩. খারাপ তথ্য প্রতিরোধে নিয়মিত ও দ্রুততার সাথে ভালো তথ্য সরবরাহ করতে হবে।

আরও পড়ুন: ১৩ নভেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে বসবে ইসি, ডাক পাবে না যারা

১৪. অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, চিহ্নিত ও তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী গ্রেফতার, তফসিল ঘোষণার পর থেকে চেক পয়েন্ট বসিয়ে রেন্ডম চেক করা, প্রয়োজনে বর্ডার ও সি-রুট সিল করা, বৈধ অস্ত্র জমা নেয়া ইত্যাদি বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

১৫ . নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন স্যাবোটার্জ এর ঘটনা ঘটতে পারে, এর প্রতিরোধে সকলকে সজাগ থাকতে হবে।

১৬. তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিদেশি নাগরিকদের তালিকা করে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।

১৭. কালো টাকার ব্যবহার রোধে আধুনিক পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে।

১৮. পোস্টাল ব্যালটের মাধ্যমে Out of Country Voting (OCV) কে নিয়েও স্যাবোটাজ এর ঘটনা ঘটতে পারে, যা মোকাবিলার আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে। রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে আগত ও সংরক্ষিত পোস্টাল ভোটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

১৯, বাহিনীর যেসকল সদস্য দীর্ঘদিন একই স্থানে পদায়ন আছেন, নির্বাচনের পূর্বে তাদের বদলির ব্যবস্থা নিতে হবে।

২০. অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, ঝুঁকিপূর্ণ ও সাধারণ ভোটকেন্দ্র শনাক্ত করে তালিকা যথাসময়ে কমিশনে দাখিল করতে হবে।

২১. আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস, সিনিয়র জেলা/জেলা নির্বাচন অফিস ও উপজেলা নির্বাচন অফিসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

২২. ভোটকেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসারের সার্বিক নিরাপত্তা বিধানসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সুসমন্বয় নিশ্চিত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন