গণভোট ইস্যুতে মুখোমুখি বিএনপি-জামায়াত

২ সপ্তাহ আগে
অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু তার আগে জুলাই সনদ এবং গণভোট ইস্যুতে মুখোমুখি অবস্থানে রাজনৈতিক দলগুলো। এর মধ্যে বড় দুই দল বিএনপি জুলাই সনদে নোট অব ডিসেন্ট রাখা এবং জামায়াত জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটের দাবিতে অনড় অবস্থানে রয়েছে। জাতীয় নির্বাচনে বাধা সৃষ্টির বিষয়েও একে অপরকে দোষারপ করছে।

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নিজ নির্বাচনী এলাকায় গত শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের এক সমাবেশ শেষে সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপির সংস্কার প্রস্তাব না মানা নতুন করে রাজনৈতিক সংকট তৈরির অপপ্রয়াস। বিএনপি যদি সংস্কার প্রস্তাব না মানে তবে এটা তাদের দায়িত্বহীনতার পরিচয় এবং নতুন করে রাজনৈতিক সংকট তৈরির অপপ্রয়াস। ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন নিয়ে জনগণের মাঝে সংশয় সৃষ্টি করাই এর উদ্দেশ্য।

 

বিএনপি সরকারের ওপর চাপ প্রয়োগ করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

 

গণভোট প্রসঙ্গে ডা. তাহের বলেন, ‘আমরা যখন সংস্কারে গণভোটের কথা উল্লেখ করেছি তারা তখন মেনে নিয়েছিল। আমরা চেয়েছি, সংস্কারের বিষয়টি গণভোটে নির্ধারণ করা হোক। তাই আমরা চাই, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট হতে হবে। তবে বিএনপি বলছে গণভোট ও নির্বাচন একইদিনে হতে হবে। তারা এখন তালের রস আমের রস একসঙ্গে করে ফেলেছে।’

 

আরও পড়ুন: বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে বোঝাপড়া হচ্ছে বলে শুনতে পাচ্ছি: পাটওয়ারী

 

তাহেরের এসব বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর শনিবার (১ নভেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বলেন, ‘নির্বাচনের পথে এখন পর্যন্ত যত বাধা এসেছে সব আপনারা দিয়েছেন। জনগণকে বোকা বানাবেন না।’

 

স্বাধীনতাবিরোধীরা মুক্তিযুদ্ধকে নিচে নামিয়ে চব্বিশের আন্দোলনকে বড় করে দেখাতে চায় বলেও উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল।

 

বিএনপি নির্বাচন পেছাতে চাচ্ছে বলে যে অভিযোগ জামায়াত নেতারা তুলেছেন তার জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছিলাম। নির্বাচন হলে অপশক্তিগুলো মাথা তুলতে পারতো না।’

 

আরও পড়ুন: গণভোটে জন্ম নেয়া দলের গণভোটে বিরোধিতা কেন, প্রশ্ন তুষারের

 

এদিকে একাত্তরের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের দায়ে জামায়াতকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। শনিবার (১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি আরও বলেন, ‘জামায়াতের শীর্ষ নেতারা জাসদের লোক ছিল, গলাকাটা পার্টি করতো। ৫ আগস্টের পর থেকে শিবির বের হয়েছে ছাত্রলীগের ভেতর থেকে। তারা এখন বলছে, তারা প্রকাশ্যেই ছিল।’

 

আলালের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম এক বিবৃতিতে বলেছেন, মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের মন্তব্যে স্পষ্ট বোঝা যায়, তিনি কাউকে খুশি করার জন্য জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছেন। তার বক্তব্যে কর্তৃত্ববাদী ও আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের সুর ধ্বনিত হচ্ছে।

 

আরও পড়ুন: একটি দল ইসলামকে ব্যবহার করে ফায়দা হাসিল করতে চায়: সালাহউদ্দিন

 

এদিকে শনিবার বিকেলে দেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যমে একটি ভিডিও বার্তা পাঠান জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের। এতে তিনি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) পুনরায় সংশোধন করার চেষ্টাকে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের ‘অন্যায়-অযৌক্তিক আবদারের কাছে নতিস্বীকার’ বলে আখ্যায়িত করেন। তারা এই সিদ্ধান্ত মানবেন না বলেও জানিয়ে দেন।
 

আরও পড়ুন: যারা আগে গণভোট চায় না তারা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী না: মুজিবুর রহমান


তিনি মনে করেন, জনগণ ফেব্রুয়ারিতে যে একটি জাতীয় নির্বাচন চাইছে, নির্বাচনের ঠিক আগে হঠাৎ এরকম রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা-উত্তাপ তৈরি করা ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন