শঙ্কায় ঘেরা রাতগুলো একটু একটু করে ছুটতে থাকে ভোরের দিকে। কে জানতো সেই ভোর আসবে রক্তাক্ত সূর্যের হাত ধরে! জুলাই সংগ্রামীদের চেতনায় তখন শুধু ভোর দেখার আকাঙ্ক্ষা, তা যদি আসে রক্তস্নানের মধ্য দিয়ে তবে তাতেও রাজি তারা। এমন মনোবল নিয়ে শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে দ্বিতীয় দিনের মতো পালিত হয় বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি।
প্রথমদিনের বাংলা ব্লকেড সফলের উদ্দীপনাকে সঙ্গে নিয়ে আরও দ্বিগুন তেজে ৮ জুলাই মাঠে নামেন শিক্ষার্থীরা। দুপুর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার থেকে শুরু হওয়া মিছিল বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে শাহবাগ অবরোধ করে। একই সময়ে সায়েন্স ল্যাব অবরোধ করেন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা, নীলক্ষেত অবরোধ করেন ইডেন ও গার্হস্থ্য অর্থনীতির শিক্ষার্থীরা। এভাবে চতুর্মুখী সড়ক অবরোধ করে চলতে থাকে বাংলা ব্লকেড।
আরও পড়ুন: রাজধানীতে ‘শহীদ আনাস সড়ক’ ও ‘শহীদ জুনায়েদ চত্বর’ উদ্বোধন
এভাবে চলে ঢাকার ১১টি স্থানে অবরোধ, ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ, ৩টি স্থানে রেলপথ অবরোধ এবং ৬টি মহাসড়ক অবরোধ।
একপর্যায়ে শিক্ষার্থীদের মিছিলটি কারওয়ানবাজারে এলে বাঁধা দেয় পুলিশ। সেই বাধা উপেক্ষা করে বিকেল ৫টায় ফার্মগেট অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। ততক্ষণে মিছিলে মানুষের সংখ্যা বাড়ে কয়েকগুণ। রাত ৮টার পর ফার্মগেট ছেড়ে আবারও শাহবাগে এসে ঘোষিত হয় পরদিনের কর্মসূচি।
৮ জুলাই দাবি আদায়ে সরকারকে তিন দিনের আল্টিমেটাম দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে আগামী তিন দিন দেশব্যাপী অবরোধ কর্মসূচির পাশাপাশি সারা দেশে গণসংযোগ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণাও আসে। মঙ্গলবার অনলাইন অফলাইন সর্বাত্মক ব্লকেডের প্রস্ততি নিয়ে বুধবার থেকে সর্বাত্মক ব্লকেডের ঘোষণা আসবে বলেন নাহিদ ইসলাম।
আরও পড়ুন: জুলাই অভ্যুত্থান: চট্টগ্রামে ৬ খুনের মামলায় দুই মাস সময় পেল তদন্ত সংস্থা
একদিকে সড়ক অবরোধ অন্যদিকে দীর্ঘমেয়াদে হলেও আন্দোলন সফল করতে সারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে গঠিত হয় ৬৫ সদস্যের সমন্বয়ক কমিটি, যা নতুন মাত্রা যোগ করে জুলাই আন্দোলনে।
]]>