খুলনায় নিরাপদ পানি নিশ্চিতে নতুন আশা: পানি সরবরাহ প্রকল্প ফেজ-২

৩ সপ্তাহ আগে
খুলনা অঞ্চলের সুপেয় পানির সরবরাহ বৃদ্ধি ও প্রস্তাবিত শহর অঞ্চলে পানি সরবারেহর লক্ষ্যে খুলনা ওয়াসার নতুন প্রকল্প ‘পানি সরবরাহ প্রকল্প ফেজ টু’ এর কাজ শুরু হতে যাচ্ছে শিগগিরই।

গত বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর)অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রকল্পসহ মোট ১৩টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ও একনেক চেয়ারপারসন ড. মুহাম্মদ ইউনুসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই সভায় প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার ব্যয়ে খুলনা পানি সরবরাহ প্রকল্প (ফেজ-২) অনুমোদিত হয়। প্রকল্পটির অর্থায়নে থাকছে সরকার ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। 


খুলনা ওয়াসা কতৃপক্ষ জানিয়েছে প্রকল্পটির ডিজাইন ও ফিজিবিলিটি সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পটি অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের পর অর্থ ছাড় হলে ঠিকাদার নিয়োগ হবে এবং মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু হবে।

আরও পড়ুন: কমছে জলাশয়, হুমকিতে খুলনা নগরীর পরিবেশ

খুলনা নগরীতে দীর্ঘদিন ধরে সুপেয় পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। ভূগর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভরতা, শুষ্ক মৌসুমে লবণাক্ততা এবং অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতার কারণে নগরবাসীকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়। বিশেষ করে গ্রীষ্ম ও শুষ্ক মৌসুমে অনেক এলাকাতেই নলকূপ ও সরবরাহ লাইনে লবণাক্ত পানি ওঠে, ফলে পানযোগ্য পানি পাওয়া যায় না। এমন পরিস্থিতিতে খুলনা ওয়াসার উদ্যোগে বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে খুলনা পানি সরবরাহ প্রকল্প (ফেজ-২), যা নগরবাসীর জন্য এক বড় স্বস্তির খবর।


প্রকল্পের আওতায় নদী থেকে সারফেস ওয়াটার সংগ্রহ করে আধুনিক প্রযুক্তিতে শোধনাগার নির্মাণ করা হবে। এর মাধ্যমে প্রতিদিন প্রায় ১৫৮ মিলিয়ন লিটার পানি সরবরাহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। পাশাপাশি শহরের যেসব এলাকায় এখনো পানি সংযোগ পৌঁছেনি, সেখানে নতুন পাইপলাইন সম্প্রসারণ ও হোল্ডিং সংযোগ দেওয়া হবে। পানির অপচয় রোধে আধুনিক মনিটরিং ব্যবস্থা (SCADA) এবং ডিস্ট্রিক্ট মিটারিং এরিয়া (DMA) চালু করা হবে। এর ফলে পাইপলাইনের লিকেজ, পানি চুরি ও বিলিং সমস্যাও অনেকটা কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।


খুলনা ওয়াসার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কামাল হোসেন জানান, প্রকল্পটি একনেনে অনুমোদন হয়েছে, এটা খুলনা অঞ্চলের বড় একটি সুখবর। মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরুর পর থেকে পরবর্তী তিন বছরের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন হবে। প্রকল্পটির অন্যান্য কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে চলছে। এরই মধ্যে কনসালটেন্ট নিয়োগ হয়েছে। তাদের কার্যক্রম শেষ পর্যায়ে রয়েছে।

আরও পড়ুন: সাজেকে শিক্ষার্থীর মৃত্যু, দূরের সেশনাল ট্যুর স্থগিত করল খুবি

খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু সায়েদ মো. মনজুর আলম বলেন. প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নগরের অধিকাংশ পরিবার প্রথমবারের মতো নিয়মিত ও নিরাপদ পানি সরবরাহের আওতায় আসবে। এতে জনস্বাস্থ্যের উন্নয়ন হবে, জলবাহিত রোগের ঝুঁকি কমবে এবং নগরবাসীর জীবনযাত্রার মানও অনেকাংশে উন্নত হবে।


তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে হলে শুষ্ক মৌসুমে লবণাক্ততা মোকাবিলায় কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা অ্যাওসের এর নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম আহসান জানান, সময়মতো কাজ শেষ করা ও রক্ষণাবেক্ষণ নিশ্চিত করাও বড় চ্যালেঞ্জ হবে। সঠিক পরিকল্পনা ও তদারকি থাকলে এ প্রকল্প শুধু খুলনার মানুষকেই নয়, পুরো দক্ষিণাঞ্চলের পানির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন