খুন হওয়া মাদরাসা শিক্ষক আমিনুল হকের জানাজায় মানুষের ঢল

৩ সপ্তাহ আগে
ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদরাসার মুয়াদ্দিস, উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের খতিব ও জেলা ইমাম সমিতির সহ-সভাপতি মাওলানা মো. আমিনুল হক নোমানীর জানাজা ও দাফন শেষ হয়েছে। রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টায় ভোলা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জানাজায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, আলেম-ওলামা, শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণসহ হাজারো মানুষ অংশগ্রহণ করেন। জানাজা শেষে মরহুমের নিজ বাড়ির পাশে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়।

জানাজা থেকেই ভোলা জেলা সর্বস্তরের তৌহিদী জনতা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনিদের গ্রেপ্তারের আল্টিমেটাম ঘোষণা করে। সেইসঙ্গে আগামী সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভোলার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়েছে।


এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ ও জেলা তৌহিদী জনতার আহ্বায়ক মাওলানা মোবাশ্বেরুল হক নাঈম।


হত্যাকাণ্ডের ১৮ ঘণ্টা অতিবাহিত হলেও (রবিবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত) পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেপ্তার বা শনাক্ত করতে পারেনি। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না থাকায় নিহতের স্বজন ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।


জানাজায় অংশ নিয়ে বক্তৃতা দেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক গোলাম নবী আলমগীর, সদস্য সচিব রাইসুল আলম, জামায়াতে ইসলামীর জেলা আমির মাস্টার জাকির হোসাইন, আজকের ভোলার সম্পাদক মুহাম্মদ শওকাত হোসেন, ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ আবুল বশার মো. আবদুর রহিম, হেফাজতে ইসলামের সহ-সভাপতি মাওলানা মিজানুর রহমান, ইসলামী আন্দোলনের জেলা সহ-সভাপতি মাওলানা এম. ওবায়দুর রহমান, নিহতের ছেলে রেদওয়ান ও শ্বশুর মাওলানা কামাল মাহমুদসহ আরও অনেক আলেম-ওলামা ও সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।


বক্তব্যে নেতারা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দায়ীদের গ্রেফতার করা না হলে, কঠোর আন্দোলনের পথে হাঁটবে তৌহিদী জনতা।


আরও পড়ুন: ভোলায় নিজ ঘরে মাদ্রাসা শিক্ষককে কুপিয়ে হত্যা


উল্লেখ্য, শনিবার (৬ সেপ্টম্বর) রাতে ভোলা শহরতলীর উত্তর চরনোয়াবাদের নিজ ঘরে নৃশংসভাবে খুন হন মো. আমিনুল হক নোমানী। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে রাতেই কয়েক দফা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বিভিন্ন ইসলামীক দল। খুনিদের প্রেফতারে ২৪ ঘন্টার সময় বেধে দেন বিক্ষোভকারীরা।


রোববার সকালে ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ বাড়িতে পৌঁছালে শোকের ছায়া নেমে আসে। দলে দলে মানুষ ছুটে আসেন মরহুমের বাড়িতে। প্রতিবেশী, রাজনৈতিক ও পেশাজীবী নেতৃবৃন্দ উপস্থিত হয়ে শোক ও সমবেদনা জানান।


ভোলা সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু শাহাদত মো. হাচনাইন পারভেজ জানান, ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে। দায়ীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে।


রোববার দুপুর পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। নিহতের দাফনের পর পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হবে বলে জানানো হয়েছে।


নিহত মাওলানা আমিনুল হক নোমানী ছিলেন ভোলা দারুল হাদিস কামিল মাদরাসার সম্মানিত মুয়াদ্দিস, উপজেলা পরিষদ জামে মসজিদের খতিব, জেলা ইমাম সমিতির সহ-সভাপতি এবং ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের ভোলা জেলা শাখার সেক্রেটারি ছিলেন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন