খাগড়াছড়ি পূজা উদযাপন পরিষদের সূত্রে জানা যায়, আগামী ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবীপক্ষের সূচনা হবে। ২৭ সেপ্টেম্বর মহাপঞ্চমী ও দেবীর বোধন, ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এরপর ২৯ সেপ্টেম্বর সপ্তমী, ৩০ সেপ্টেম্বর অষ্টমী, ১ অক্টোবর নবমী এবং ২ অক্টোবর বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে দুর্গোৎসব।
ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী, এ বছর দেবী দুর্গা গজে (হাতি) চড়ে আগমন করবেন এবং দোলা বা পালকিতে বিদায় নেবেন।
নিরাপত্তায় কঠোর প্রস্তুতি
উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তিনস্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তুলেছে।
পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল জানান, দুর্গম এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপগুলো চিহ্নিত করে সেখানে স্থায়ী নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। প্রতিটি মণ্ডপে থাকবে পুলিশের টহল, সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি ও মোবাইল পেট্রোলিং। এছাড়াও গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: যশোরে ৭০৮ মণ্ডপে বাজবে দুর্গাপূজার ঢাক
খাগড়াছড়ি জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অশোক কুমার মজুমদার বলেন, ‘শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা সম্পন্নের লক্ষ্যে সেনাবাহিনী মাঠে রয়েছে। নিরাপত্তায় সিসিটিভি ক্যামেরা ও স্বেচ্ছাসেবকরাও কাজ করবে। গত বছরের মতো এবারও শঙ্কাহীন উৎসব হবে।’
জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানান, জেলা পর্যায়ে প্রশাসন, পুলিশ ও পূজা উদযাপন পরিষদের নেতাদের নিয়ে প্রস্তুতিমূলক সভা শেষ হয়েছে। পূজার সময় পুলিশের পাশাপাশি আনসার ও গ্রাম পুলিশও দায়িত্বে থাকবে।
মণ্ডপ ও বরাদ্দ
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর খাগড়াছড়ি জেলায় ৬৪টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে—
* সদর উপজেলায় ২১টি
* পানছড়ি ১০টি
* দীঘিনালা ৯টি
* মাটিরাঙ্গা ৯টি
* গুইমারা ৫টি
* মানিকছড়ি ৪টি
* মহালছড়ি ২টি
* রামগড় ২টি
* এবং লক্ষ্মীছড়িতে ১টি মণ্ডপ।
পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তমাল তরুণ দাশ বলেন, ‘প্রতিটি মণ্ডপে সরকারের পক্ষ থেকে ৫০০ কেজি চাল, পৌরসভার পক্ষ থেকে ৫ হাজার টাকা, হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে ৩ হাজার টাকা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয় থেকে ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।’
প্রতিমা তৈরির ব্যস্ততা
সরেজমিনে দেখা গেছে, জেলার প্রায় সব মন্দিরেই প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষের দিকে। চলছে শেষ মুহূর্তের রং তুলি ও সাজসজ্জা। প্রতিমাশিল্পীরা জানিয়েছেন, যথাসময়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হবে এবং নির্ধারিত সময়ে প্রতিটি মণ্ডপ সজ্জিত হবে।
আরও পড়ুন: দুর্গাপূজায় সরকারি ছুটি ৩ দিন দাবি
কারিগররা বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও তারা অধীর আগ্রহে প্রতিমা তৈরির কাজ করেছেন। ছোট-বড় প্রতিমা বিক্রি করে একেকজন লক্ষাধিক টাকা আয় করেন। সারা বছর কাজ না থাকলেও পূজার সময় একসাথে একাধিক প্রতিমা তৈরির অর্ডার পান তারা।
উৎসবমুখর পরিবেশ
গত বছরের তুলনায় এবার মণ্ডপের সংখ্যা বেড়েছে। আয়োজকরা আশা করছেন, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই অংশ নেবে এই উৎসবে। পূজা উদযাপন পরিষদ আশাবাদী, কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ হবে শারদীয় দুর্গোৎসব।
]]>