খাগড়াছড়িতে দুর্গাপূজা ঘিরে জমে উঠেছে কেনাকাটা

১ সপ্তাহে আগে
শারদীয় দুর্গাপূজা শুরু হতে আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। পূজার আমেজ ঘনিয়ে আসতেই খাগড়াছড়িতে জমে উঠেছে উৎসবের কেনাকাটা। শহরের বড় বিপণিবিতান থেকে শুরু করে ফুটপাতের অস্থায়ী দোকান সবখানেই ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে।

পূজা যত ঘনিয়ে আসছে, ততই উৎসবমুখর হয়ে উঠছে বাজার। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর শুরু হবে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। পার্বত্য জেলাগুলোতে শুধু বাঙালি হিন্দুরাই নয়, ত্রিপুরা ধর্মাবলম্বীরাও এ উৎসব পালন করে থাকেন।

 

বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে দেখা গেছে, খাগড়াছড়ির বিভিন্ন শপিংমল, বিপণিবিতান ও ফুটপাতের দোকানে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। পোশাক, জুতা, কসমেটিকস, ইমিটেশনের গয়না ও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার ধুম পড়েছে। নিম্নবিত্তদের আনাগোনাও চোখে পড়ার মতো। ক্রেতাদের মধ্যে তরুণ-তরুণীদের উপস্থিতি ছিল সবচেয়ে বেশি। তারা জানান, শেষ মুহূর্তের ভিড় এড়াতে আগেভাগেই কেনাকাটা সেরে নিচ্ছেন। বিক্রেতারা বলছেন, গত সপ্তাহের তুলনায় বিক্রি কয়েকগুণ বেড়েছে।

 

জেলা পরিষদ মার্কেট, সেলিম ট্রেড সেন্টারসহ বিভিন্ন বিপণিবিতানে চলছে পূজার কেনাকাটা। শঙ্খ, শাঁখা, সিঁদুরসহ পূজার সামগ্রীরও চাহিদা বেড়েছে। বাজারের অলিগলিতে এখন উৎসবের আমেজে ভরপুর ভিড়। বিভিন্ন দোকানে জিন্স প্যান্ট ৬০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, ড্রপ সোল্ডার টি-শার্ট ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, শার্ট ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা, আর সাধারণ টি-শার্ট ২০০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

আরও পড়ুন: দুর্গাপূজা উদযাপনে খাগড়াছড়িতে বিএনপির মতবিনিময় সভা

 

কেনাকাটা করতে আসা ক্রেতা পরিতোষ দে বলেন, ‘পূজায় বাড়িতে যাব। আগেভাগেই পরিবারের সবার জন্য কেনাকাটা করছি। দাম কিছুটা বেশি, কিন্তু আয় তো বাড়েনি। তাই চাপেই পড়তে হচ্ছে।’ অন্যদিকে হরিপদ ত্রিপুরা বলেন, ‘ছেলেমেয়ে আর বউয়ের জন্য কেনাকাটা করেছি। প্রতি বছরের মতো এবারও জামাকাপড়ের দাম কিছুটা বেশি।’

 

নারী ক্রেতাদের ভিড় ছিল শাড়ির দোকানে। মৌসুমি ত্রিপুরা বলেন, ‘ভিড় বাড়ার আগেই কেনাকাটা করতে এসেছি।’ বাবলী ত্রিপুরাও জানালেন, ‘এখন ভিড় কম থাকায় স্বাচ্ছন্দ্যে কেনাকাটা করতে পারছি।’ শাড়ি বিক্রেতা মো. শাহ আলম বলেন, ‘পূজার সময়ে সাধারণত ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়ে। তখনই মূলত কিছু লাভ হয়।’

 

এছাড়া শহরের বিভিন্ন ব্র্যান্ড শো-রুমেও ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। কাপড় কিনতে আসা রূপন বিশ্বাস বলেন, ‘দুর্গাপূজা আমাদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান। প্রতিবছরই পরিবারের জন্য কেনাকাটা করি।’

 

আরও পড়ুন: খাগড়াছড়ির লক্ষ্মী নারায়ণ মন্দির প্রাঙ্গণে শুভ মহালয়ার আয়োজন

 

ব্যবসায়ীরা জানান, দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ডিজাইনের কামিজ, কুর্তি, থ্রি-পিস, থান কাপড়, জামদানী, বেনারসি, কাতান, সিল্ক ও তাঁতের শাড়ি বাজারে এসেছে। বিক্রি ভালো হচ্ছে, ব্যবসাও জমজমাট। স্বর্ণালঙ্কারের দোকানগুলোতেও ক্রেতাদের সমাগম বাড়ছে।

 

খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, ‘দুর্গাপূজা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পূজামণ্ডপ, বিপণিবিতান ও জনসমাগমস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন থাকবে।’

 

খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, ‘পূজাকে ঘিরে শহরের মার্কেট ও বিপণিবিতানগুলোতে প্রশাসনের সর্বোচ্চ নজরদারি রয়েছে। ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন