ক্রেতা বিক্রেতাদের হাক ডাকে খাগড়াছড়ি জেলার ২৬টি কোরবানির হাট এখন বেশ সরগরম। জেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকা থেকে স্থানীয় কৃষক, খামারি এবং ব্যবসায়ীরা গরু নিয়ে আসেন হাটে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জমে উঠে পশুর হাট। বাজেটের মধ্যে পছন্দের কোরবানির গরু খুঁজতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় ব্যয় করেছেন ক্রেতারা।
কৃষক ও খামারিরা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর গরু পালনের খড়, কুড়াসহ অন্যান্য উপকরণের দাম বেশি, কিন্তু গরু বিক্রিতে তারা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না। বাজার দর হিসেবে লোকসানের আশঙ্কার কথা জানান তারা।
জেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতাদের কাছে এ বছর ছোট ও মাঝারি আকারের গরুর চাহিদাই বেশি। ছোট আকারের গরু ৭০ থেকে ৮০ হাজার, মাঝারি আকারের গরু ৯০ থেকে দেঢ় লাখ টাকা এবং বড় গরু বিক্রি হচ্ছে ১ লাখ ২০ হাজার থেকে আড়াই লাখ টাকার মধ্যে। অনেকে দেখেশুনে হাট থেকে তাদের পছন্দের গরু নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। আবার অনেকে অপেক্ষায় রয়েছেন শেষ হাটের দিনে বাজেটের মধ্যে গরু কেনার জন্যে।
আরও পড়ুন: মহাসড়কের পাশে গরুর হাট নিয়ে উত্তেজনা, মুখোমুখি প্রশাসন ও হাট কমিটি
ইজারাদার মো. কামাল হোসেন জানিয়েছে কোরবানির হাট জমে উঠেছে। সমতল জেলাগুলোতে খাগড়াছড়ির গরুর বাড়তি আকর্ষণ রয়েছে। রোগমুক্ত প্রাকৃতিকভাবে লালন পালন করা গরু তাদের প্রথম প্রচন্দের তালিকায়। তাছাড়া বাজারে পশুর পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে জেলার বাইরে কোরবানির পশু যাচ্ছে প্রতিদিন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুর্পণা দে জানান, জেলার ৯টি উপজেলায় ছোট-বড় মিলে মোট ৩ হাজার খামার রয়েছে। বড় বড় খামারের পাশাপাশি গ্রামের কৃষক পরিবারগুলো বাড়িতে বাড়িতে গড়ে ৩-৪টি করে গবাদিপশু প্রস্তুত করেছে।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস জানিয়েছে, চলতি বছর ৯টি উপজেলায় ১৯ হাজার ১৬০ টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এরমধ্যে গরু ১২ হাজার ৮১০ টি, মহিষ ১৫ টি, ছাগল ৬ হাজার ১১০ টি এবং ভেড়া ৮০টি। আসন্ন কোরবানিতে জেলার চাহিদা মেটানোর পরেও প্রায় ১ হাজার ১৬০টি পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। সুস্থ সবল ও ভালো গরু যাতে ক্রেতারা নিতে পারেন তার জন্যে হাটে বসেছে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম।
খাগড়াছড়ির পুলিশ পুলিশ সুপার আরিফিন জুয়েল জানান, কোরবানির পশুবাহী ট্রাকসহ বিক্রেতাদের বিভিন্ন স্থানে যাতে চাঁদাবাজি ও হয়রানির শিকার হতে না হয় এবং জাল টাকার ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ পুলিশ প্রশাসন কাজ করছে।
আরও পড়ুন: সেনাবাহিনীর নিষেধ অমান্য করে অতিরিক্ত ইজারা আদায়, ইজারাদারের জরিমানা
জেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা যায় গেল বছর খাগড়াছড়িতে ১৫ হাজারের মতো পশু কোরবানি হয়েছে ।তবে এবার খাগড়াছড়ির ৯ উপজেলায় ২৬ টি পশুর হাটে ১৯ হাজারেও বেশি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
শেষ মুহূর্তে কোরবানির পশুর হাট-বাজারগুলোতে দাম আরও বাড়বে এমনই প্রত্যাশা খামারি ও বাজার ইজারাদারদের।