খাগড়াছড়ি পৌরসভা ও সদর উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি

৪ দিন আগে
খাগড়াছড়ি পৌরসভা, সদর উপজেলা ও গুইমারা উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার এ আদেশ জারি করেন। শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) বিকাল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এটি বলবৎ থাকবে।

এদিকে স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের প্রতিবাদ এবং নারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় চলছে সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ ছোট খাটো বিক্ষিপ্ত ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। বিক্ষিপ্ত ঘটনার মধ্যদিয়ে চলা জুম্ম ছাত্র-জনতার এ অবরোধে দূরপাল্লার সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। জেলার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতেও গাড়ি চলাচল করেনি। অবরোধকারীরা খাগড়াছড়ি ঢাকা-চট্টগ্রাম সড়কে বলপিয়া আদাম এলাকাসহ জেলার বিভিন্ন সড়কে গাছ কেটে ফেলে ও টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে। এছাড়া জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কে টায়ার পুড়িয়ে, গাছ কেটে ব্যারিকেড করা হয়। আলুটিলায় একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুরের শিকার হয়।


তবে শহর এলাকায় হালকা কিছু বেটারী চালিত কিছু অটো রিকশা ও মোটরসাইকেল চলাচল করছে। আর যারা সাজেকে ঘুরতে এসেছেন তারা অনেকে বিপাকে পড়েছেন। অনেক পর্যটক প্রায় ৩/৪ কিলো হেঁটে শহরে ঢুকেছে। তবে আজ স্কুল কলেজ অফিস আদালত বন্ধ থাকায় সে ধরনের কাউকে বেশি বিপাকে পড়তে দেখা যায়নি। এছাড়া অবরোধের কারণে এখনো পর্যন্ত কোথাও কোনো বড় ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।


এদিকে খাগড়াছড়ি জেলায় আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ও জনগণের জান ও মালের ক্ষতি সাধনের আশঙ্খায় আজ দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত খাগড়াছড়ি পৌর এলাকা ও সদর উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে খাগড়াছড়ি জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার। অপরদিকে একই কারণে জেলার গুইমারা উপজেলায়ও অনির্দিষ্ট কালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছেন গুইমারা উপজেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আইরিন আক্তার।


বেড়াতে আসা পর্যটকরাও বিপাকে পড়েছেন। অনেকে সাজেক ফেরার পথে সড়কেই আটকে আছেন। জানা গেছে গতকাল ২ হাজার ২ শত পর্যটক সাজেকে প্রবেশ করেছে। এর মধ্যে আজ সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ১ হাজার ৫০ জন পর্যটক খাগড়াছড়ির দিঘীনালা উপজেলার সেনা ক্যাম্পের আশপাশে নিরাপদে অবস্থান করছে বলে নিরাপত্তাবাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে।


আরও পড়ুন: খাগড়াছড়িতে স্কুলছাত্রীকে অজ্ঞান করে গণধর্ষণ, বিচারের দাবিতে আধাবেলা সড়ক অবরোধ


তবে, দুপুরে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলা এলাকায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের দুটি গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় ব্যাপক ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে ৮ জন আহত হন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তবে এসব ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে। এদিকে খাগড়াছড়িতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ০৭ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন। বর্তমানে খাগড়াছড়িতে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।


উল্লেখ্য, গত ২৩ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় প্রাইভেট পড়া শেষে ফেরার পথে অষ্টম শ্রেণির এক মারমা কিশোরী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করে খাগড়াছড়ি সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পরের দিন সকালে সেনাবাহিনীর সহায়তায় সন্দেহভাজন যুবক শয়ন শীলকে আটক করে পুলিশ। বর্তমানে তাকে রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।


খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন মৃধা জানান অবরোধের কারণে কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। জনজীবন স্বাভাবিক আছে। যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে পুলিশ সতর্ক রয়েছে। এছাড়া সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পুলিশ মোতায়েন আছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন