খলিলুর রহমানের সফরকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের সুযোগ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা

২ দিন আগে
তিনদিনের ব্যবধানে নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানের ভারত সফর এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোগবের ঢাকা সফরকে দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের সুযোগ হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা। খলিলুর-অজিতের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক দুই দেশের সম্পর্কে যেমন স্থিতিশীলতা আনবে, তেমনি বাংলাদেশ-ভারতের অভিন্ন বন্ধু হওয়ায় ভুটানের শীর্ষ পর্যায়ের সফর আঞ্চলিক কূটনীতির ক্ষেত্রে ইতিবাচক বার্তা দেবে বলে মনে করেন তারা।

ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাকে আশ্রয় দেয়ার পরই ঢাকা-দিল্লি সর্ম্পক উত্তপ্ত হতে শুরু করে। অন্তবর্তীকালীন সরকার তাকে ফেরত পাঠাতে চিঠি দিলেও এখনো পর্যন্ত কোনো উত্তর আসেনি দেশটি থেকে। 


সর্বশেষ ১৩ নভেম্বর মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে মৃত্যুদণ্ড দিলে, প্রত্যার্পণ চুক্তির আওতায় তাদের ফেরত আনার কথা জানান কয়েকজন উপদেষ্টা।


এমন প্রেক্ষাপটে বৃহস্পতিবার ভারতের দিল্লিতে কলম্বো নিরাপত্তা কনক্লেভের ৭ম অধিবেশনে অংশ নেন উপদেষ্টা খলিলুর রহমান। এর আগে, বুধবার দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিয়ে ভারতের নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান তিনি।


আরও পড়ুন: ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নয়’, দিল্লিতে গিয়ে বললেন বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা


আন্তজার্তিক সর্ম্পক বিশ্লেষকদের মতে, এ বৈঠকে আসন্ন নির্বাচন ঘিরে দিল্লির শঙ্কাসহ নিরাপত্তা ইস্যুতে দু'দেশের অবস্থান কতটা পরিষ্কার হলো তা ভবিষ্যৎ বলে দেবে। এছাড়া, শেখ হাসিনাকে ফেরত আনতে শুধু অন্তর্বর্তীকালীন নয়, পরবর্তী নির্বাচিত সরকারকেও কূটনীতিক-রাজনৈতিকভাবেই মোকাবিলা করতে হবে।


আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলেন, নির্বাচন ভারতের জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সেই ক্ষেত্রে আমার মনে হয় এই বিষয়েও আলোচনা হবে এবং নিরাপত্তাজনিত যে উদ্বেগগুলো আছে সেগুলো নিশ্চিত ভাবেই ভারত তুলে ধরবে। নিরাপত্তা উপদেষ্টা বাংলাদেশের অবস্থা তুলে ধরবে।


তিনি আরও বলেন, গেলাম ধরে নিয়ে আসলাম। আপনাকে একটা প্রসেসের মধ্যে দিয়ে যেতে হবে। এটা সময় সাপেক্ষ নতুন সরকারকে স্বাভাবিকভাবেই বিষয়টাকে রাজনৈতিক ভাবে এবং পররাষ্ট্র নীতির মাধ্যমেই করতে হবে।


সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমদ বলেন, বেশ কিছুদিন স্থবিরতার পর এখন আবার একটা সম্পর্ক নতুন করে এগুনো যায় কিনা এই চেষ্টাটা করতে হবে।


অন্যদিকে, প্রধান উপদেষ্টার আমন্ত্রণে আরেকটি প্রতিবেশী দেশ-ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর শেরিং তোগবে তিনদিনের রাষ্টীয় সফরে ২২ নভেম্বর ঢাকায় আসছেন। ঢাকা সফর শেষে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে তার। নির্বাচনে আগে ভূটানের প্রধানমন্ত্রীর সফরকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। অভিন্ন বন্ধু ভুটানের মাধ্যমে দিল্লি ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের চেষ্টা করতে পারে বলেও মনে করেন তারা। যদিও, আঞ্চলিক কূটনীতির চেয়ে ব্যবসায়িক সম্পর্ক উন্নয়নই সফরে প্রাধান্য পাবে বলে মত তাদের।


নিরাপত্তা উপদেষ্টার ভারত সফর এবং ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরকে দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক স্থিতিশীল করার সুযোগ হিসেবে দেখছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন